Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

তাহেরপুরে মেয়রপ্রার্থীর সমর্থকের চোখ উৎপাটনের চেষ্টা


ইউএনভি ডেস্ক:

প্রতিপক্ষ মেয়রপ্রার্থীর সমর্থককে মাইক্রোতে তুলে চোখ উৎপাটনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে।

শনিবার রাতে কালামের নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী প্রতিপক্ষ মেয়রপ্রার্থীর সমর্থক দুলাল দাসকে (৩৭) মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চোখ উৎপাটনের চেষ্টা চালিয়েছেন। এরপর দুলালকে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে একটি ব্রিজের নিচে মাইক্রোবাস থেকে ফেলে দিয়েছেন।

সংকটাপন্ন অবস্থায় আহত দুলালকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

নির্যাতনে শিকার দুলাল জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি কালীবাড়ি এলাকায় আসন্ন তাহেরপুর পৌরসভার মেয়রপ্রার্থী আবদুর রাজ্জাক বাবু ওরফে আর্ট বাবুর নির্বাচনী পোস্টার সাঁটাচ্ছিলেন। এ সময় ওই স্থান দিয়ে মেয়র কালামের মাইক্রোবাসাটি যাচ্ছিল। মাইক্রোবাস থেকে তার পোস্টার সাঁটানো দেখতে পান মেয়র কালাম এবং তার ক্যাডাররা। এরপর কালাম তার ক্যাডার এরশাদ, শাহীন এবং সোহেলসহ ৪-৫ জনকে তাকে গাড়িতে তুলে আনার নির্দেশ দেন।

দুলাল বলেন, মারতে মারতে আমাকে মাইক্রোবাসে তোলা হয়। কেড়ে নেয়া হয় আমার মোবাইল ফোন। এরপর মাঝের সিটের নিচে ফেলে দেয়া হয়। সেখানে বসে ছিলেন মেয়র কালাম। তারপর আমাকে মেয়র কালামসহ তার ক্যাডাররা কিলঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে এরশাদ আমাকে মেরে ফেলার জন্য মেয়র কালামের কাছে নির্দেশ চান। ওই সময় আমাকে মেয়র অশ্লীল গালিগালাজ করে আমার চোখ তুলে নেয়ার নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে এরশাদ আমার দুই চোখের ভেতর তার আঙুল ঢুকিয়ে দিয়ে তুলে ফেলার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তারা আমাকে এক কিলোমিটার দূরে চানখালি ব্রিজের নিচে ফেলে দিয়ে চলে যান।

নির্যাতিত দুলালের শ্যালক অনুপ কুমার দাস বলেন, আমার বোনজামাইকে ব্রিজের নিচে ফেলে দেয়ার পরে তিনি গোঙরাতে থাকেন। এ সময় পথচারীরা তাকে উদ্ধার করেন। তারা মোবাইল ফোনে আমাদের বিষয়টি জানান। এরপর তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাগমারা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আমরা তার চোখ দুটি নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে আছি। চোখ ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক আঘাত রয়েছে।

রামেক হাসপাতালের ২৫নং ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার এসএম শাখাওয়াত হোসেন জানান, দুলালের দুই চোখেই মারাত্মক আঘাত রয়েছে। তার দুটি চোখই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে কিছু টেস্ট করিয়েছি। আরও কিছু টেস্ট করাতে হবে। নির্দিষ্ট সময় না যাওয়া পর্যন্ত চোখ দুটি স্বাভাবিক থাকবে কিনা- এখনই তা বলা যাচ্ছে না।
মেয়র কালামের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বাগমারা উপজেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি মেয়রপ্রার্থী আবদুর রাজ্জাক বাবু ওরফে আর্ট বাবু অভিযোগ করেন, শনিবার রাতে দুলালের ওপর হামলার পর বাগমারা থানায় গেলেও থানা বিভিন্ন অজুহাতে অভিযোগ গ্রহণ করেনি। পরে অভিযোগ নেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। দুলালের ওপর হামলার পরে তাহেরপুরে মেয়র কালামের বিরোধীরা আবারও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

প্রতিপক্ষ মেয়রপ্রার্থীর সমর্থকের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়র কালাম বলেন, আমি এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে। সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমার সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

তবে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, বাগমারা এখন শান্তির জনপদ। নতুন করে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কেউ শুরু করলে সেটা বরদাশত করা হবে না। যে বা যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, আহত দুলালকে চিকিৎসা নেয়ার জন্য দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছি। তিনি সুস্থ হলে থানায় অভিযোগ নেয়া হবে।- যুগান্তর


Exit mobile version