দলের জন্য ৩২ বার জেলে যাওয়া নেতা আজ প্রত্যাখ্যাত


নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘৭১ এর রণাঙ্গনের হিরু মাষ্টার জেলা আওয়ামী  ও. ম. নূরুল আলম হিরু মাষ্টার ৭৯ বছরে তরুণ যুবক, রণাঙ্গনে সম্মুখ সারির বীর যোদ্ধা, ‘৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করা এবং ঐ দুর্দিনে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করতে যেয়ে ৩২ বার জেলে যেতে হয়েছিল।তিনি দূর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

অবসরপ্রাপ্ত এই স্কুলশিক্ষক  আওয়ামী লীগ করার কারণে  অনেক অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। তারপরও তিনি কোনদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে পিছপা হন নাই। তিনি ‘৭১ এর রণাঙ্গনের মতই এখনই বুকে একরাশ সাহস ও উদ্দীপনা নিয়ে চলেন। জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালন কালে তিনি সকল কর্মসূচি একং সভা সমাবেশে সশরীরের উপস্থিত হতেন। তিনি রাজশাহী জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এখনও তিনি তেজদ্বীপ্ত কন্ঠে আওয়ামী লীগের সংগঠনের পাশে থাকার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত, চলতে হলে তাকে লাঠিতে ভর করে চলতে হয়। কিন্তু তার দৃঢ় মনোবল এখনও সেই যুবকের মত যেন চলতে চাই।

তিনি একজন নিষ্ঠাবান, সৎ এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতিবিদ। তার কোন লোভ লালসা এখন পর্যন্ত নাই। ছিল শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিবাদী কন্ঠ। আওয়ামী লীগ যাতে আরোও শক্তিশালী হয় সে জন্য কি করতে হবে সেই দিকে তার পরামর্শ ও চিন্তা চেতনা ছিল? কর্মীদের পাশে থাকার জন্য যা করতে হবে সে দিকে দৃষ্টি ছিল তার। সংগঠনে কর্মী তৈরিতেও তার বড় ভূমিকা ছিল। সেই হিরু মাষ্টারদের মত প্রবীণ এবং জেলা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে যাদের অবদান তাদের জায়গা হয়নি বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটিতে।

হিরু মাষ্টটারকে তার দূর্গাপুরের বাসায় দেখতে যান রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাঃ আসাদুজ্জামান আসাদ। এই সময় হিরু মাষ্টার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের মত এত সুন্দর সংগঠনকে এলোমেলো করে দিল কিছু হাইব্রিড নেতারা। যে সংগঠনের জন্য কাজ করেছি অবিরত সেই সংগঠনকে কিছু ব্যবসায়িক আর অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা ডুবিয়ে দিল। আমাদের মত মানুষদের বাদ দিয়ে জামায়ত-বিএনপির মানুষদের নিয়ে আসলো।

যে সংগঠনের জন্য পরিশ্রম করেছিল দিনরাত আর সেই সংগঠনকে তারা ব্যবহার করছে অর্থের জন্য, ক্ষমতায় থাকার জন্য। আমাদের ত্যাগী নির্যাতিত কর্মীদের সংগঠন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এই সব দেখে আর নিজের ধর্য্য ধরে রাখতে পারি না। সুন্দর গুছানো কর্মীদের পদচারণায় মুখর সংগঠনটি চোখের সামনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তখন অনেক বড় কষ্ট পাঈ। সেই কষ্ট জীবনের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া হাজারো নির্যাতনের থেকে অনেক বড়। বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা শত কষ্ট সহ্য করে এই দলটি গুছিয়ে ছিল আমাদের মত মানুষেেদর দিয়ে। আর এখন সুবিধাবাদী, সুযোগ সন্ধানী, অর্থ লিপ্সাদের হাতে চলে গেল সংগঠনের দায়িত্ব। কর্মীরা আবারও নির্যাতনের শিকার হতে লাগলো। আর কত সহ্য করব এইগুলো দেখে। এই ভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তিনি।

আসাদ তাকে স্বান্তনা দেওয়ার জন্য বলেন, আপনারা যে ভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করেছেন। সেই সময় আর এই সময় এক নয়। তারপর আমরা আওয়ামী লীগের কর্মী হয়ে শেখ হাসিনার পাশে ছিলাম আছি এবং থাকব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একা লড়ে চলেছেন। তাই কর্মীরা তার পাশে ছিল এবং থাকবে। আপনারা আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণা। আশা করি আপনাদের পরিশ্রম বৃথা যাবে না। আমরা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য তাপর পাশে রয়েছি সব সময়। এই সময় আসাদুজ্জামান আসাদের সাথে ছিল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব।


শর্টলিংকঃ