দুঃসময়ে গলার কাঁটা রামেকের করোনা ল্যাব!


বিশেষ প্রতিবেদক :

প্রায় মাসখানেক ধরেই নাজুক অবস্থায় চলছিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজের করোনা ল্যাব।এ কারণে রিএজেন্ট নষ্টের তালিকা বেড়েছে। তবে জট কমাতে প্রায় আড়াই হাজার নমুনা পাঠানো হয়েছে ঢাকায়। যদিও এই ল্যাবে পরীক্ষার পরও প্রায় সাড়ে তিনশ’ নমুনার কোনো রেজাল্টই মেলে নি। আর সাড়ে চার হাজারেরও বেশি নমুনা পরীক্ষার পর পজিটিভি শনাক্ত হয়েছে মাত্র ৯৪টি।

পহেলা এপ্রিল দেশের তৃতীয় করোনা ল্যাব চালু হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগে।তবে মাসখানেক না যেতেই দেখা দেয় নানা বিপত্তি।এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জেলা থেকে আট হাজার ১০০টি নমুনা এলেও পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে মাত্র চার হাজার ৬৫৬টির। ল্যাবের ত্রুটির কারণে রিপোর্ট দেয়া যায় নি ৩৪১টির।দিনকে দিন নমুনা বাড়তে থাকায় জট  কমাতে ঢাকায় পাঠানো হয় প্রায় আড়াই হাজার নমুনা। এই পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছে কর্তৃপক্ষ

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাবেরা গুলনাহার জানান, শুরুদিকে ভালই চলছি ল্যাব। কিন্তু মাসখানেক থেকে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে প্রায় প্রতিদিনই অর্ধেক নমুনার রেজাল্ট ইনভ্যালিড আসে। তখন ওই নমুনাগুলো আবারো পরীক্ষা করতে হয়। এভাবে প্রতিটি নমুনার জন্যই রিএজেন্ট লাগে একটি করে। ফলে কোনো নমুনার ইনভ্যালিড হলে তার রিএজেন্টও বাতিল হয়ে যায়।  এতে সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তার নমুনার আমরা কোনো রেজাল্ট দিতে পারি না।

এতোদিন কোনো রকমে কাজ চললেও গেল শনিবার ও রোববার  পুরোপুরি বন্ধ ছিল করোনা ল্যাব।এরইমধ্যে রিয়েল টাইম পিসিআর মেশিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়াররা এসে পৌঁছেছেন। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর পরীক্ষামূলকভাবে ল্যাবটি চালু হয়েছে সেমাবার।  এরপরও আশ্বস্ত সহতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

 

এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ  ডা. নওশাদ আলী ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে বলেন, দেশে প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুও। ঈদের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী হঠাৎ করেই দ্বিগুণ হয়েছে। এ অবস্থায় বেশি বেশি নমুনা টেস্টের প্রয়োজন। বিশেষ করে চলতি মাসের মাঝামাঝিতে করোনা চূড়ান্ত রূপ ধারণ করতে পারে।   এমন পরিস্থিতির মুখেরও আমরা ল্যাবের সমস্যার কারণে নিয়মিত টেস্ট করতে পারছি না। ইঞ্জিনিয়াররা সফটওয়্যারের সমস্যার কথা জানিয়েছেন। তারা দুদিন ধরে কাজ করছেন। তবে এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কী হবে!

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ল্যাবে পরীক্ষার কাজে জড়িত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, গতকাল সোমবার পরীক্ষামূলকভাবে মেশিন রান করানো হয়েছিল। আজকে আবারো নমুনা মেশিনে নিয়ে ইঞ্জিনিয়াররা বসেছেন। এখন দেখা যাক কী হয়।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় সোমবার পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯১৭ ব্যক্তির। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী বগুড়ায়-৩৫৭জন। আর এই বিভাগে করোনায় মারা গেছে ৬জন।


শর্টলিংকঃ