দুদকের অভিযানে প্রায় ২৩ লাখ টাকাসহ উচ্চমান সহকারী আটক


কাজী কামাল হোসেন, নওগাঁ:

গ্রাহকের আমানত থেকে আত্মসাৎ করা প্রায় ২৩ লাখ টাকাসহ নওগাঁ জেলা সঞ্চয় অফিসের উচ্চমান সহকারী হাসান আলীকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। বুধবার দুপুরে দুদকের রাজশাহী জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের তদন্ত দল এ অভিযান পরিচালনা করে। তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেন ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

 

দুদকের কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশন রাজশাহী’র সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন জাতীয় সঞ্চয় অফিস/ব্যুরো নওগাঁ’র অফিস থেকে ৬২ জন সঞ্চয়ীর ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা লাপাত্তা হয়েছে মর্মে পুলিশে একটি মামলা দায়ের করেন ঐ অফিসের সহকারী পরিচালক মোঃ নাসির উদ্দিন। মামলা নম্বর ৫৬ তারিখ ১৫/০৬/২০১৯।

পরবর্তীতে মামলাটি দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রেরিত হলে বিষয়টি’র তদন্ত শুরু করে দুদুক। প্রথম পর্যায়ে সঞ্চয় অফিসের অফিস সহায়ক সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তের এক পর্যায়ে উক্ত সাদ্দাম হোসেনকে রিমান্ডে এনে ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেয়া স্বীকারোক্তি এবং গোপন সোর্সের মাধ্যমে দুদক সংবাদ পায় যে অফিসের উচ্চমান সহকারী মোঃ হাসান আলী এই ঘটনার সাথে জড়িত আছে। এমন কি তার অফিসের আলমারীতে আত্মসাৎকৃত টাকা রয়েছে।

প্রেক্ষিতে বুধবার মামলার কদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেন নওগাঁয় সঞ্চয় অফিসে দিনব্যপী তল্লাশী চালান। উক্ত হাসান আলীর অফিসিয়াল আলমারী থেকে ২২ লাখ ৮৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। দুদকের অনুমান এই টাকাগুলো গ্রাহকের আত্মসাৎকৃত টাকার অংশ।

বিকেল ৫টায় জাতীয় সঞ্চয় অফিস/ব্যুরো’র উচ্চমান সহকারী উক্ত হাসান আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। নওগাঁ সদর থানার পুলিশ তাকে জেলা হাজেত প্রেরন করে।

এর আগে, নওগাঁয় জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরে গ্রাহকের প্রায় ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়েছে। বিভাগীয় অডিটে বিষয়টি বেরিয়ে আসার পর এতে অফিস সহায়ক সাদ্দাম হোসেনকে দায়ী করেন কর্মকর্তারা। ঘটনাটি অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক।

গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ার পর নওগাঁ সঞ্চয় অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত সঞ্চয় কর্মকর্তা নাসির হোসেন বাদী হয়ে গত ১৫ জুন অফিস সহকারী সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

নওগাঁ সঞ্চয় অধিদপ্তর অফিসে ২০১৪ সাল থেকে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত ছিলো সাদ্দাম হোসেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে হঠাৎ করে অফিসে আসা বন্ধ করে দেয় সে। এরপর ৭ মাস অফিসে আসেনি। সাদ্দাম বেশ কিছু আমানতের হিসাবের রেকর্ড না রেখে গ্রাহককে ভুয়া সিল-স্বাক্ষরে রসিদ দিয়েছে। এধরনের বিভিন্ন পন্থায় দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন গাইবান্ধা জেলা সদরের পশ্চিম কোমরনই গ্রামের বক্তার আলীর ছেলে। গত ২৫ জুন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের অনুসন্ধানীদল তাকে আটক করে।বর্তমানে দুদকের টিম এ মামলার তদন্ত করছে।


শর্টলিংকঃ