দুর্গাপুরে গার্মেন্টস কর্মীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ, স্বামী পলাতক


দুর্গাপুর প্রতিনিধি:

রাজশাহীর দুর্গাপুরে শান্তা খাতুন (৩৫) নামের এক গার্মেন্টস কর্মীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত গার্মেন্টস কর্মী শান্তা গাজীপুরের আশুলিয়া মডেল থানা এলাকার একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করতো। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছে। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেনি শান্তার স্বজনরা।

জানা গেছে, উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের হাবিবর রহমানের ছেলে রাজীবের সাথে প্রতিবেশী নুরুল ইসলামের মেয়ে শান্তা খাতুনের গত প্রায় ১০ বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে বিয়ে হয়। সম্পর্কে তারা চাচাতো ভাইবোন। গাজীপুরের আশুলিয়া এলাকায় ভিন্ন দুটি গার্মেন্টসে চাকুরী করতেন তারা। সেই থেকে তাদের প্রেম এবং শেষ পর্যন্ত বিয়ে। তবে পরিবারের লোকজন তাদের এ বিয়ে প্রথমে মেনে নিয়েছিলেন না।

এরপর প্রায় ৮মাস আগে শান্তার কোলজুড়ে একটি ছেলে সন্তান আসলে পরিবারের সদস্যরা তাদের এ বিয়ের পারিবারিক ভাবে স্বীকৃতি দেন। নিহত শান্তার ভাই আব্দুল কুদ্দুস জানান, তার বোন স্বামীর সাথেই আশুলিয়া এলাকার মুন্সিপাড়ায় থাকতেন। শুক্রবার দিনগত রাতের কোন এক সময় শান্তা খাতুনকে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। সকালে চাচাতো ভাই ময়নালের মাধ্যমে খবর পান তার বড় বোন শান্তা মারা গেছেন।

তবে কিভাবে মারা গেছে তা তিনি জানতেন না। পরে শনিবার সকাল ৭টার দিকে মোবাইল ফোনে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বিয়ে হওয়া ছোট বোন সাথীকে খবরটি জানান। এরপর সাথী বড় বোনের বাড়ির উদ্দেশ্যে যেতে চাইলেও এরই মাঝে ফোন দিয়ে তাকে রাস্তায় দাঁড়াতে বলেন দুলাভাই রাজীব। দুলাভাইয়ের কথামতো গাজীপুরের চান্দুড়িয়ায় দাঁড়ান সাথী। একটু পরেই শান্তার লাশবাহী মাইক্রোবাসটি পৌছালে সাথীকেও ওই গাড়িতে উঠিয়ে গ্রামের বাড়িতে রওনা দেন।

বেলা ১১টার দিকে শান্তার লাশ গ্রামের বাড়ি দুর্গাপুরের নারায়াণপুর গ্রামে পৌছালে শান্তার মরদেহ দেখে আঁতকে উঠেন পরিবারের স্বজনরা। এ সময় শান্তার গলা, বুকে ও পিঠে নানা রকমের আঘাতে চিহ্ন ও কালশিরা দেখতে পান পরিবারের স্বজনরা। কুদুস আরো বলেন, আঘাতের চিহ্ন দেখে রাজীবকে জিজ্ঞেস করা হলে সে কোন উত্তর না দিয়ে লাশ রেখে সটকে পড়ে।

তার বোনকে রাজীব পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে এমন দাবিও করেন তিনি। নিহত শান্তার মা কাজুরী বেগম অভিযোগ করেন, রাজীবের এর আগেও একটি বউ ছিলো। ওই বউকে তাড়িয়ে দিয়ে তার মেয়ে শান্তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে। এরপর আবারো অন্য একটি মেয়েকে গোপনে বিয়ে করে রাজীব। ওই বিয়েতে বাধা দেয়ার কারণেই তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খুরশীদা বানু কণা জানান, যেহেতু ঘটনাটি গাজীপুর জেলার আশুলিয়া মডেল থানা এলাকায় ঘটেছে। সেহেতু সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করতে হবে। তারপরও বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।


শর্টলিংকঃ