ধামইরহাটে পুকুর গ্রাস করছে শিশুদের রাস্তা


ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

নওগাঁর ধামইরহাটে ১৩২ জন শিশু শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা পুকুর গ্রাস করছে। পুকুর মালিকাদের অবহেলায় গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি পুকুরের আগ্রাসনে হারিয়ে যেতে বসেছে। এক্ষুনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে শিশু শিক্ষার্র্থী,শিক্ষকসহ এলাকাবাসীকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

জানা গেছে,ধামইরহাট উপজেলার আড়ানগর ইউনিয়নের কাজিপুর গ্রামে ৩৫ নং কাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত। বিদ্যালয়টি ১৯৪৫ সালে বৃটিশ আমলে স্থাপিত হয়। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে প্রায় ১৩২ জন শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে। গ্রামের পশ্চিম দিকে অনেকটা কোলাহল মুক্ত পরিবেশে এ বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে। ৭৫ বছর বয়স হলেও এ বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নেই।

বিদ্যালয়ে যাওয়ার একটি মাত্র কাঁচা রাস্তা রয়েছে। বিদ্যালয়ের পূর্ব-দক্ষিণ দিকে ওই রাস্তার সাথে লাগানো কাজিপুর গ্রামের আনোয়ার,আব্দুল খালেক সরদার ও মৃত আক্কাস আলী গংদের একটি শরিকান পুকুর রয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মওসুমে পুকুরটি পানিতে ভরে যায়। পুকুরের পানিতে রাস্তা এবং বিদ্যালয়ের পূর্ব অংশ ভেঙ্গে পুকুরে হারিয়ে যেতে বসেছে। বিদ্যালয়ে যাওয়ার সড়কে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রায় ৫৬ মিটার এবং বিদ্যালয়ের পূর্ব সীমানার উত্তর থেকে দক্ষিণ অংশ প্রায় ৩০ মিটার এলাকায় মারাত্মক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

পুকুরের পানির আগ্রাসনে রাস্তা ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে সরু হয়ে গেছে। এ বর্ষা মওসুমের আগে সংস্কার করা না হলে যে কোন মুর্হুতে রাস্তার কোন নিশানা থাকবে না। তাছাড়া এ পুকুরে কোন গাইড ওয়াল নেই। পুকুরের কারণে রাস্তা ও বিদ্যালয়ের সীমানা ভেঙ্গে যাচ্ছে। এ বিষয়ে পুকুর মালিকদের ভাঙ্গন প্রতিরোধে কোন উদ্যোগ নেই। প্রতি বছর রাস্তা ও বিদ্যালয়ের সীমানা ভেঙ্গে পুকুরের আকার বেড়ে যাওয়ায় তাদেও লাভ হচ্ছে।

ওই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী মোসফিকা তাছনিম জানাই,বর্ষা মওসুমে পুকুরের পানি রাস্তার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র রিয়াদ বাবু জানাই,একেতো কাঁচা রাস্তা তার উপর পানি। অনেক সময় আমাদেরকে ধান খেতের মাঠ দিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়।

কাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা.রোকসানা মনি বলেন,বর্ষা মওসুমে পুকুরের পানিতে রাস্তা ও পুকুর একাকার হয়ে যায়। এতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। রাস্তা পাকাকরণ ও পুকুরে গাইড ওয়াল নির্মাণের জন্য দুই দফা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি।

এলজিইডি ধামইরহাট উপজেলা প্রকৌশলী মো. আলী হোসেন বলেন, রাস্তা বা বিদ্যালয়ের পার্শে পুকুর করতে হলে অবশ্যই পুকুরের পাড় শক্তভাবে বাঁধতে হবে। তাছাড়া পুকুরের পানি যেন রাস্তা বা অন্য কোন স্থাপনাকে ঝুঁকিতে ফেলতে না পারে সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। তারপরও ব্যক্তি মালিকানার পুকুর রাস্তা ও অন্য কোন স্থাপনার ক্ষতি করলে ভুক্তভোগিগণ সংশ্লিষ্ট দপ্তওে অভিযোগ করলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। রাস্তা ও বিদ্যালয়ের সীমানা পুকুরের ভেঙ্গে যাচ্ছে। রাস্তাটি পাকাকরণের উদ্যোগ নেয়া হলেও প্রধান শিক্ষকের অসহযোগিতায় তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।


শর্টলিংকঃ