ধারের টাকা চাইতে গিয়ে ফোন ছিনতাইয়ের শিকার ইবি শিক্ষার্থী


ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ধারের টাকা চাওয়ায় সিনিয়র কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে এক জুনিয়রের ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ত্রিবেনী রোডে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক দিনের মধ্যে ফোন ফেরৎ দেওয়ার নির্দেশ দিলেও ফোন ফিরে পায়নি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষার্থী মইনুল ইসলাম জয়ের থেকে তার ধারের টাকা নিতে গেলে এই পরিকল্পিত ছিনতাইয়ের শিকার হয়। জয়ের কাছে পাওনা টাকা ফেরত চাইলে সে ভুক্তভোগীকে রাত ১টার দিকে শেখ রাসেল হলের সামনে ডাকে।

পরে ফোন দিয়ে প্রথমে বঙ্গবন্ধু হলের পকেট গেট ও পরে হল সংলগ্ন ত্রিবেনী রোডের নির্জন এলাকায় ডেকে নেয়। সেখানে কিছু টাকা পরিশোধ করে বাকি টাকার জন্য অপেক্ষা করতে বলে। কিছুক্ষণ পরে সেখানে দুজন ছেলে এসে ছুরি দেখিয়ে আসাদের হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নেয়। এসময় জয়ের ফোন নিলেও পরে তাকে ফোন ফেরত দিয়ে শুধু আসাদের ফোন নিয়েই ছিনতাই কারীরা স্থান ত্যাগ করে।

ভুক্তভোগী আসাদের দাবি ছিনতাইয়ের এই ঘটনা জয় পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে। এছাড়াও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আসাদকে ডেকে ছিনতাই স্থল যাওয়ার আগে জয়কে তার কয়েকজন বন্ধুসহ ওই রাস্তা দিয়ে আসতে দেখা যায়।

আসাদ এঘটনার বিচারের দাবিতে ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর বরাবর আবেদন করে। একই দিনে প্রক্টরের পরামর্শে ইবি থানায় সাধারণ ডাইরি করতে যায়। থানায় কর্তব্যরত কর্মকর্তা ঘটনা শুনে সাধারণ ডায়েরী না করে সরাসরি মামলা করতে বলে। বিষয়টি প্রক্টরকে জানালে তিনি মামলা করতে নিষেধ করেন।

পরে প্রক্টর অভিযুক্ত মইনুল ইসলাম জয়কে ডেকে একদিনের মধ্যে ফোন ফেরৎ দিতে আল্টিমেডাম দেন। কিন্তু ফোন ছিনতাইয়ের দুই দিন গত হলেও ফোন ফেরত পায়নি ওই শিক্ষার্থী। প্রশাসন থেকে বেধে দেওয়া সময়ে ফোন ফেরৎ না দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভুক্তভোগি শিক্ষার্থীকে থানায় মামলা না করে সাধারণ ডায়েরী করতে বলা হয়।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে জয় বলেন, ‘এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমাকে কোনো কারণে ফাসাঁনো হচ্ছে।’

এদিকে অভিযুক্ত মাইনুল ইসলাম জয় বাঁচার জন্য শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের কাছে ধরনা দিচ্ছে জানা যায়। ধারণা করা হচ্ছে এতে করে পার পেয়ে যাচ্ছে অভিযুক্ত জয়।

এবিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সাথে কথা বললে তারা জানান, ‘অভিযুক্ত ওই ছেলে ছাত্রলীগের কেউ না। সে আমাদের কারো কাছে আসেনি, অন্য কার কাছে গেছে আমরা জানিনা। সে যদি দোষী হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই চাইব তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্থা নেওয়া হোক।’

বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. আনিছুর রহমান বলেন, ‘ছেলেটির সাথে কথা হয়েছে। ফোনটি উদ্ধারের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা আগামীকাল বসব।’


শর্টলিংকঃ