নওগাঁয় ওএমএস এর চাল নিয়ে মারপিটের ঘটনায় আহত ৫


নিজস্ব প্রতিবেদক:

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় হত-দরিদ্রদের জন্য সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর (ওএমএস) এর ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণে অনিয়মের ঘটনা ধামাচাপা দিতে কৌশলে কার্ডধারীদের মাঝে অতিরিক্তি চাল বিতরন করা হয়। পরে ওএমএস ডিলার শরিফ উদ্দিন শনিবার ৬মে সেই অতিরিক্ত চালের মূল্য আদায় করতে গেলে সুবিধাভোগিদের সাথে মারপিটের ঘটনায় ডিলারসহ উভয় পক্ষের ০৫ জন আহত হয়েছে।

আহতরা হলো ,উপজেলা সদরের দক্ষিন রাজাপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনের ছেলে কার্ডধারী আশরাফুল ইসলাম মিঠু ও ছোট ভাই কার্ডধারী আব্দুর রউফ রতন, একই গ্রামের মৃত রিয়াজুল শেখের ছেলে ওএমএসের ডিলার শরিফ উদ্দিন (৫৮), ছোট ভাই মোহাতাব হোসেন (৫৫) এবং মোহাতাবের ছেলে আবু সাইদ মৃদুল (১৮) আহত হয়। আহতদের রাণীনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়রা জানান, গত ৩০ মে দুপুরে নওগাঁ থেকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওএমএসের ডিলার শরিফ উদ্দিনের গুদাম ঘরে কালো বাজারে বিক্রির জন্য চাল মজুদ রয়েছে এমনটি সংবাদ পেয়ে গুদাম ঘর তল্লাশী করে ৬৭ বস্তা চাল মজুত পায়। কিন্তু ডিলার শরিফ উদ্দিন নিজেকে বাঁচাতে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে চাল পরের দিন পর্যন্ত বিতরণ করা হবে এবং গ্রাহকরা আসেনি বলে জানালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফিরে যান।

৩১ মে রাণীনগর সদর খট্টেশ্বর ইউনিয়নের হত-দরিদ্রদের জন্য সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ১০ টাকা কেজি দরের চালের (ওএমএস) ডিলার শরিফ উদ্দিন এলাকার বেশ কিছু কার্ডধারীদের নিকট চাল বিতরণ করেন। এ সময় উপজেলা সদরের দক্ষিন রাজাপুর গ্রামের কার্ডধারী সুবিধাভোগী আব্দুর রউফ রতন (৪৪) ও তার ভাই আশরাফুল ইসলাম মিঠু (৪৭) কে দুই কাডের্র বিপরীতে ৬০ কেজির পরিবর্তে ২০০ কেজি চাল সরবরাহ করে।

পরে অতিরিক্ত প্রতি কেজি চালের দাম ৩০ টাকা হিসেবে ডিলার দাবী করলে মিঠু ও রতন ১০ টাকা কেজি দিতে চান। কিন্তু ওএমএস ডিলার শরিফ উদ্দিন ৩০ টাকা কেজি না দিলে চাল ফেরত দিতে বলে। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এরই জের ধরে শনিবার সকালে দক্ষিন রাজাপুর মোড়ে চাল নিয়ে দ্বন্দ্ব বাধে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে।

এতে দক্ষিন রাজাপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম মিঠু ও ছোট ভাই আব্দুর রউফ রতন এবং একই গ্রামের মৃত রিয়াজুল শেখের ছেলে ডিলার এসএম শরিফ উদ্দিন (৫৮) ছোট ভাই মোহাতাব হোসেন (৫৫) এবং মোহাতাবের ছেলে আবু সাইদ মৃদুল (১৮) আহত হয়। আহত আশরাফুল ইসলাম মিঠু জানান, আমরা দুই ভাই মিলে চাল ৩০ কেজি করে মোট ৬০ কেজি চাল পাবো। কিন্তু আমাদেরকে ২০০ কেজি চাল দেয়া হয়েছে।

পরের দিন অতিরিক্ত চাল ৩০ টাকা কেজি দরে টাকা চেয়েছে। আমরা ১০ টাকা কেজি দিতে চাইলে দর নিয়ে মতোবিরোধ বাধে। শনিবার সকালে চা-স্টলে আসলে আবারো ৩০ টাকা কেজি দরে চালের টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না দিলে চাল ফেরত নিয়ে আসবে। এ নিয়ে কথা কাটাকটির এক পর্যায়ে ডিলার শরিফ ও তার লোকজন আমাদেরকে মারপিট করে।

ওএমএস ডিলার ও থানা আওয়ামীলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক শরিফ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, চাল নিয়ে কোন দ্বন্দ্ব হয়নি। পারিবারিক বিষয়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল মামুন সাংবাদিকদের জানান, ওএমএসের চাল নিয়ে মারপিটের ঘটনার বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, মারপিটের ঘটনায় উভয় পক্ষকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


শর্টলিংকঃ