নদী থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি


মানিক হোসেন, ভাঙ্গুড়া (পাবনা):

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়া গুমাণী ও বড়াল নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে নদী থেকে মাটি কাটার ঘটনা জেনেও নিশ্চুপ জেলা প্রশাসন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় নদী থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। এই মাটি উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। ছবি: মানিক হোসেন।

রোববার ও সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বড়াল এবং গুমাণী নদী থেকে মাটি উত্তোলন করে ছোট-বড় ট্রাক বোঝাই করে ইটের ভাটাসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ড্রেজার ব্যবহার করে নদী দু’টির বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ব্যাপকভাবে মাটি কাটা হচ্ছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্ষায় নদীতে প্রবল স্রােত থাকলেও শুষ্ক মওসুমে নদীর মাঝে অনেকাংশে পলি জমে পানি শূন্য হয়ে পড়ে। ঠিক তখনই নদী থেকে মাটি কাটার কাজ শুরু করেন স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা। অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটার ফলে বর্ষায় মওসুমে বড়াল ও গুমাণী নদীর পার্শ্ববর্তী সড়ক, বসতঘরবাড়ি ও জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে পড়ার আশংকা রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, কিছু দুর্বৃত্ত নদীর সৌন্দর্য ও গতি প্রবাহ বিনষ্ট করছে। বড়াল ও গুমানী নদীর চরের ফসলি জমিও কেটে নিয়ে যাচ্ছে তারা। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে কেউ কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না। তারা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এ ব্যবসা করছে।

নদী থেকে কাটা মাটি ট্রাকে বোঝাই করে ভাটায় নেওয়া হচ্ছে। ছবি: মানিক হোসেন

মাটিখেকোদের বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করলেও কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ তাদের। এতে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ (পওর) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম জহুরুল হক বলেন,‘নদী দেখার দায়িত্ব জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের, আমাদের নয়।’ তবে এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাছুদুর রহমানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায় নি।


শর্টলিংকঃ