নদী দখল করে চারঘাট পৌরসভার টয়লেট নির্মান


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর চারঘাট স্লুইস গেট সংলগ্ন এলাকায় নদী দখল করে টয়লেট নির্মাণ করছে চারঘাট পৌর কর্তৃপক্ষ। জেলা প্রশাসন কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কোনো ধরনের বন্দোবস্ত কিংবা অনুমতি ছাড়াই এই স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে উপজেলা ভূমি অফিস।

পৌরবাসীর সার্বিক সুযোগ সুবিধা এবং অবকাঠমোর উন্নয়নে প্রায় ১৫২ কোটি টাকার কাজের প্রস্তবনা আছে। ইউজিআইআইপি-৩ (তৃতীয় নগরায়ন) এর প্রায় ৩৪ কোটি টাকার কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। যদিও এ কাজ সম্পূর্ণ করার মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। অভিযোগ আছে, প্রকল্পের টাকা খরচ করতে বিভিন্ন দফতরের সাথে সমন্বয় না করে অপরিকল্পিত ভাবে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করছে চারঘাট পৌর কতৃপক্ষ। এতে প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘ মেয়াদি টেকসই উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে পড়ছে চারঘাট। নদী দখল করে টয়লেট নির্মানও পৌরসভার তেমনই একটি অপরিকল্পিত কাজ।

আরোও পড়ুন: গণফোরামের চার নেতাকে বহিষ্কার

চারঘাট পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় ৫ টি পাবলিক টয়লেট নির্মান করা হচ্ছে। প্রতিটি টয়লেটের নির্মান ব্যায় ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে একটি নির্মান করা হচ্ছে স্লুইস গেট সংলগ্ন চারঘাট থানা ভ্যান রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন সমিতির পেছনে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রমিক ইউনিয়ন সমিতির পেছনে নদী ভরাট করে আরসিসি পিলারের ওপর টয়লেটটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শেষ। টয়লেটের ভেতরের কাজ চলছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নির্মানাধীন ওই টয়লেট নির্মানে পৌর কতৃপক্ষ যবর দখলের পরিচয় দিচ্ছে। স্থানীয় সচেতন মহল বাঁধা দিলেও কর্ণপাত করেনি পৌরসভা। স্থানীয় প্রশাসনসহ নদী রক্ষাকারী সংগঠন গুলোকে বুড়ো আঙুল দেখি টয়লেট নির্মান চলমান রেখেছে পৌর কতৃপক্ষ। নদী দখল করে ভবন নির্মাণ করায় নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এ ছাড়া পৌর টয়লেট নির্মান কাজ চলমান থাকলে ওই ভবন ঘিরে আরও অনেক স্থাপনা নির্মাণ হবে। এতে বড়াল নদী আরও সংকুচিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানতে চাইলে পাউবোর নাটোর কার্যালয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আল আসাদ বলেন, চারঘাট পর্যন্ত বড়াল নদীর পরিচালন ও রক্ষানবেক্ষন দায়িত্বে রয়েছে নাটোর পাউবো। পাউবোর কাছ থেকে ওই জমির কোনো বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া নদী দখল করে ভবন নির্মাণের জন্য পাউবোর অনুমতি নেই। বরং দখলমুক্ত করার নির্দেশনা রয়েছে। যদি এটা কেউ করে থাকে, তবে তা সম্পূর্ণ অবৈধ।

চারঘাট পৌর মেয়র জাকিরুল ইসলাম বিকুল বলেন, জনসার্থে টয়লেটটি নির্মান করা হচ্ছে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সাথে আলাপ করে জায়গাটি নির্বাচন করা হয়েছে।ৎ

চারঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আনিসুর রহমান বলেন, নদীর জমিতে ঐ টয়লেট নির্মানে জেলা প্রশাসন কিংবা পাউবোর অনুমতি নেই, এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। নদীর জমিতে টয়লেট নির্মানে পৌর কতৃপক্ষকে একাধিকবার নিষেধ করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে উচ্ছেদ কেস ফাইল করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ হলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।


শর্টলিংকঃ