নাটোরে দু’টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়:শিক্ষানগরী পিছিয়েই থাকলো!


নাটোর জেলাতেই দু’টি পাবলিক ‘কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ হতে যাচ্ছে।একটি নাটোর সদরে ‘ডক্টর ওয়াজেদ আলী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’এবং অপরটি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নিজের উপজেলা সিংড়ায়।নাটোর থেকে সিংড়ার দূরত্ব মাত্র ২১ কি:মি:।একই জেলায় একই ধরনের দু’টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়াটা কতখানি যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

খবরটি ৮ জুলাইয়ের রাজশাহীর স্থানীয় দৈনিক সোনালী সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় পড়লাম।পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল।শিক্ষানগরী রাজশাহীতে একটি স্বতন্ত্র এবং পূর্ণাঙ্গ পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার মতো প্রধান প্রধান সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্বেও এখানকার জনপ্রতিনিধিসহ বুদ্ধিজীবী, বিদ্যোৎসাহি, শিক্ষাজীবী, শিক্ষাবিদ, শিক্ষানুরাগি বলে খ্যাতদের অসচেতনতা এবং অবহেলার কারণে নাটোর এগিয়ে থাকলো।

২০১৮ সালের ১০ জুলাই মেয়র প্রার্থী লিটনের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহীর সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ অনেক শিক্ষাবিদ,গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন।তাঁর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুইজন উপাচার্যও ছিলেন।তাঁরা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীরও সন্মানিত সদস্য।তাঁরা তাঁদের নিজস্ব দু’টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন।

একটি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়,অপরটি নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।নির্বাচনী ডামাডোল শেষ হবার পর ইশতেহারে স্থান পাওয়া স্বতন্ত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয নিয়ে তাঁরাও আর মাথা ঘামাননি।আমরা জানি,মেয়র নির্বাচিত হবার পর তাঁকে অসংখ্য ব্যস্ততার মধ্যে থাকতে হয়।রাজশাহীর সুশীল সমাজের উচিত ছিল,মেয়র মহোদয়ের পিছনে লেগে থাকা।

একটি বড় প্রজেক্ট সরকারের অনুমোদন পেতে হলে সচেতন এলাকাবাসির প্রেরণায় যোগ্যতাসম্পন্ন জনপ্রতিনিধিদের নিরলসভাবে দীর্ঘদিন লেগে থাকতে হয়।যতটা না প্রয়োজন,তার চেয়ে অনেক বেশি দরকার হয়, প্রজেক্ট বের করে আনার মত একনিষ্ঠ লোক এবং চেষ্টা।সেক্ষেত্রে নাটোরের দুই এমপি প্রশংসার দাবিদার।

একটি স্বতন্ত্র এবং পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি রাজশাহীবাসির দীর্ঘদিনের ।রাজশাহীর মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও এটি।যুগে যুগে এখানকার অনেক বড় বড় নেতার মঞ্চের লেকচারেও বহুবার এই দাবিটি উচ্চারিত হয়েছে।কিন্তু ঐ পর্যন্তই।প্রজেক্ট আকারে সেটা জায়গামত দাখিল করা,যৌক্তিকভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে তা আদায় করে আনার মতো ব্যক্তিত্বপূর্ণ এবং যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষের বড়ই অভাব।

পরিস্থিতি বিবেচনায় বোঝা যায়,রাজশাহীতে পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এখন সুদূরপরাহত।তবে আমরা মনে করি,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি সঠিকভাবে বুঝাতে পারলে ইতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারে।নাটোরের এই দু’টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো ৫টি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার।ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জরুরিভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের মতামত চেয়েছে।

আমার মনে হচ্ছে,এই ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সরাসরি উপরমহলের সবুজ সংকেত আছে।রাজশাহীবাসির এই দাবিকে বাস্তবায়ন করতে হলে এখন আন্দোলন ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা আছে বলে আমার মনে হয়না।নাটোরে যে দু’টি হচ্ছে ,সেগুলো একেবারে গোড়া থেকে শুরু করতে হবে।কিন্তু রাজশাহীতে প্রায় সবকিছুই আছে,শুধুমাত্র সরকারি ঘোষণার প্রয়োজন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে মাত্র চারটি বিভাগ অন্তর্ভূক্ত আছে।এগ্রোনমি এন্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগ,ফিশারিজ বিভাগ,ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগ এবং ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগ।মূল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তরে প্রায় ৫ কি:মি: দূরে নারিকেলবাড়িয়ায় কৃষি অনুষদের কয়েকটি বিভাগের কিছু অংশ আছে।

এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নামেও পরিচিত।এখানে রয়েছে ভেটেরিনারি ক্লিনিক এন্ড ফার্ম হাউস।এ ছাড়াও রয়েছে ভেটেরিনারি বিভাগ ও ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগসহ কৃষি অনুষদের পরীক্ষণ ও গবেষণা খামার।এখানে দোতলা ভবনের মধ্যে এগুলোর দপ্তরসমূহও রয়েছে।তাছাড়া ক্যাম্পাসের মধ্যেই আলাদা-আলাদাভাবে ফার্ম,পরীক্ষাগার,প্রজনন কেন্দ্রও আছে।পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্বাচনে নারিকেলবাড়িয়া উত্তম বলে অনেকে মতামত দেন।

রাজশাহীতে আসার পথে বাইপাস রোড থেকে বামে প্রায় ১ কি:মি: ভিতরে এই ক্যাম্পাসের অবস্থান।চমৎকার পরিবেশ।চারিদিক দিয়ে যোগাযোগের ব্যবস্থা আছে।মোদ্দা কথা, কৃষি অনুষদের বর্তমান অবস্থান,নারিকেলবাড়িয়ার আয়তন,অবকাঠামো ও শিক্ষা কার্যক্রমের সুযোগ-সুবিধা,প্রদত্ত ডিগ্রি,অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী,শিক্ষক,কমকর্তা-কর্মচারির সংখ্যা ইত্যাদি বিবেচনায় অনুষদটি একটি স্বতন্ত্র ও পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকখানি এগিয়ে আছে।

পরবর্তিতে বৃহৎ রূপ নিলে ক্যাম্পাস সংলগ্ন কিছু জমি অধিগ্রহণ করে অবকাঠামো তৈরি করা যেতে পারে।ভেটেরিনারি এবং ক্রপ সায়েন্সের ছাত্র-ছাত্রীরা মূল ক্যাম্পাস থেকে নারিকেলবাড়িয়া বেশ দূর হবার কারণে সেখানে যেতেও তাদের অনীহা।দূরত্ব, যাতায়াতের জন্য পরিবহণের তীব্র সংকট,আবাসন সমস্যা,সময় নষ্ট,হয়রানিসহ নানাবিধ কারণে নারিকেলবাড়িয়া থেকে সবকিছু মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের জন্য তারা মাঝেমাঝে আন্দোলনও করে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের চারটি বিভাগ সম্পূর্ণ গবেষণাভিত্তিক।কিন্তু গবেষণা বলতে যা বুঝায়,তা থেকে এখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা বঞ্চিত।একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হলে সেখানে আরো অনেক বেশি বিভাগ থাকে।ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদে ৪১টি বিভাগ আছে।শেরে বাংলায় ৪টি অনুষদে ৩১টি বিভাগ রয়েছে।সিলেটে ৭টি অনুষদে ৪৭টি বিভাগ,গাজীপুরে ১০টি বিভাগ এবং ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ৭টি অনুষদে ৫১টি বিভাগ নিয়ে গঠিত।

সেখানে অনুষদভিত্তিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র চারটি বিভাগ।এখান থেকে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ কৃষিবিদ,প্রাণিবিজ্ঞানী,কৃষি প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ গড়ে ওঠা আদৌ কী সম্ভব! পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা যেসকল শিক্ষক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন,তাঁরা নিজেরাই হতাশ হয়ে যান।কৃষিবিজ্ঞানের মত এত বিশাল জগতের কোন কিছুই তারা ছাত্র-ছাত্রীদের শিখাতে পারছেননা।

যে চারটি বিভাগ আছে,সেখানে না আছে পরিমিত শ্রেণীকক্ষ, না আছে শিক্ষার্থী অনুপাতে যথেষ্ট ল্যাব,না আছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইকুয়িপমেন্ট,না আছে যথেষ্ট ব্যবহারিক কিংবা গবেষণা ফিল্ড,না আছে শিক্ষকদের যথেষ্ট ব্যক্তিগত চেম্বার।নানা অপ্রতুলতায় কৃষি অনুষদ জর্জরিত।এ কারণে অনেক শিক্ষার্থীই স্নাতক শেষে মাস্টার্স করার জন্য অন্যন্য পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায়।কৃষি বিষয়ক পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাতেও পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তুলনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে আছে।

বরেন্দ্র অঞ্চল তথা রাজশাহীর অর্থনীতি ঐতিহাসিকভাবেই কৃষি নির্ভর।কৃষিভিত্তিক বিভিন্ন সামগ্রী অতিরিক্ত উৎপন্নের রেকর্ড এখনও অটুট রেখেছে রাজশাহী।বাংলাদেশের অন্যতম শস্য ভান্ডার হিসেবেও রাজশাহী পরিচিত।অতিমাত্রায় কৃষিভিত্তিক এ অঞ্চলের আয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ আসে কৃষি খাত থেকে।রাজশাহী থেকে উদ্বৃত্ত ধান,আলু,পিঁয়াজ,কলা,পান,টমেটো,মাছসহ শাক-সব্জি ও তরিতরকারি এবং আরো নানাবিধ কৃষিপণ্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়।

প্রতিদিন রাজশাহী থেকে টন টন চাউল ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়।রাজশাহীকে আমের রাজধানীও বলা হয়।লিচুও এখানে প্রচুর উৎপন্ন হয়।রাজশাহীর মাটি ও আবহাওয়া আমের মত লিচু চাষের জন্যও উপযোগী।রাজশাহীতে কৃষিভিত্তিক ইপিজেড স্থাপনের ভাল সম্ভাবনা আছে।যেখানে এই এলাকায় উৎপাদিত আলু,টমেটো,বরই এবং আম কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

আম,টমেটো থেকে জ্যাম,জেলি এবং জুসও তৈরি হতে পারে।এর সাথে বর্তমানে যোগ হয়েছে মাছের উৎপাদন।জ্যান্ত মাছ সরবরাহে দেশের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী।রাজশাহীবাসির দীর্ঘদিনের দাবি কৃষিভিত্তিক ইপিজেড,সেটাও হচ্ছেনা।

রাজশাহীতে কৃষি সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।এগুলোর মধ্যে নগরীর পূর্বাঞ্চলে ৩২ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত আঞ্চলিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট,বিশাল জায়গায় গম ও ভুট্টা গবেষণা ইন্সটিটিউট এবং ফল গবেষণা কেন্দ্র আছে।এছাড়া নগরীর পশ্চিমাঞ্চলে সরকারিভাবে রাজাবাড়িতে রয়েছে ২২৯ একর বিশাল জায়গা জুড়ে রাজশাহী দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামার।

একই জায়গায় পাশাপাশি রয়েছে ছাগল উন্নয়ন খামার,অঞ্চলিক হাঁস-মুরগী খামার এবং কৃত্রিম প্রজনন গবেষণাগার।বিশাল বিশাল জায়গা নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান ধুক ধুক করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।বছরের পর বছর এসব প্রতিষ্ঠানগুলো কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনছে।অনিয়ম,দুর্নীতি আর অবহেলার চিহ্ন এখানকার প্রত্যেক পরতে পরতে।সবগুলো লোকসানি প্রতিষ্ঠান।এসব প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম এবং দুর্নীতির জন্য স্থানীয় এলাকাবাসি দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে।

এগুলোর খবর বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় মাঝে-মধ্যেই ছাপা হয়।সরকারি এই প্রতিষ্ঠানগুলো যদি জাতীয় উন্নয়নে কোন অবদান নাই রাখতে পারে,উল্টো বছরের পর বছর জনগণের অর্থের লোপাট হয়,তাহলে সেসব প্রতিষ্ঠান রেখে লাভ কী! বরং নারিকেলবাড়িয়ার বিকল্প হিসেবে এখানকার বিশাল বিশাল জায়গায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের চিন্তা-ভাবনা করা কী অযৌক্তিক হবে?সেখানে যারা চাকরি করেন,তাদেরেকে কৃষি বিষয়ক অনেক দপ্তর আছে,সেইসব প্রতিষ্ঠানে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

রাজশাহী বায়ুদুষণমুক্ত শ্রেষ্ঠ নগরী,ইতিবাচক পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে আছে।এসব দিক বিচার বিবেচনায় নাটোর জেলায় দু’টির মধ্যে রাজশাহীতে একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থানান্তরের দাবির পথ এখন অনেকটা সহজ হবে বলে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানের ধারণা।সবচেয়ে বড় বিষয়,রাজশাহী মুখে মুখে শিক্ষানগরী হিসেবে পরিচিত হয়ে গেছে।এর সরকারি স্বীকৃতি আদায় করা এপর্যন্ত সম্ভব হয়নি।

এখানেও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের অবহেলাকে অনেকে দায়ি করেন।তাই,এই শিক্ষানগরীকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে এবং এর মর্যাদা বৃদ্ধি করতে হলে উঁচুমানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনও জরুরি এবং এ ক্ষেত্রেও সার্বিক দিক দিয়ে এগিয়ে আছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।এই করোনা ভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রচন্ড ধস নেমেছে।শহর থেকে কর্ম হারিয়ে হাজার হাজার মানুষ এখন গ্রামে ফিরে যাচ্ছে।লাখ লাখ প্রবাসি শ্রমিক কর্মসংস্থান হারাচ্ছেন।এতে বিপর্যয়ের বেশি প্রভাব পড়বে গ্রামীণ অর্থনীতিতে।

এই থমকে যাওয়া অর্থনীতি সচল করতে আমাদের একমাত্র আশার আলো কৃষি খাত।করোনা পরবর্তি অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমাদের অন্যতম ভরসা কৃষি।তাই স্বাস্থ্য খাতের পরেই সরকারকে কৃষি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পনা করা উচিত বলে বিশেষজ্ঞদের মতামতে জানা যায়।রাজশাহীতে অতি সত্বর একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হলে,এখানে কৃষি বিষয়ক যে সব সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে,তারা সমন্বিতভাবে গবেষণা করলে কৃষি খাতে অত্র অঞ্চলের তথা করোনা পরবর্তি সুদূরপ্রসারি অথনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিশাল ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

লেখক: সাবেক সভাপতি,রাজশাহী প্রেসক্লাব ও কলাম লেখক।


শর্টলিংকঃ