নাসায় কাজের সুযোগ পাবেন বাংলাদেশের পাঁচ তরুণ


ইউএনভি ডেস্ক :

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা আয়োজিত স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০১৮–এর একটি বিভাগে জয়ী হয়েছে বাংলাদেশের পাঁচ তরুণের দল ‘অলিক’। ‘বেস্ট ইউজ অব ডেটা’ বিভাগে ওই দলের তৈরি ‘লুনার ভিআর’ সারা বিশ্বের ১ হাজার ৩৯৫টি দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বিজয়ী হয়েছে। এ প্রতিযোগিতায় তাদের প্রকল্প পেছনে ফেলেছে ক্যালিফোর্নিয়া, কুয়ালালামপুর ও জাপানের প্রকল্পকে। ওই প্রতিযোগিতায় বাকি পাঁচ বিভাগসহ সব বিভাগের জয়ী দলের সদস্যরা নাসায় যাওয়ার এবং সেখানে শিক্ষানবিশ হিসেবে কিছুদিন কাজ করার সুযোগ পাবেন।

                                টিম অলিক ভিআর প্রকল্পের জন্য ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ

বাংলাদেশের পাঁচ তরুণের এই দল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের। দলের সদস্যরা হলেন আবু সাবিক মাহদী, সাব্বির হাসান, বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী, কাজী মাইনুল ইসলাম ও এস এম রাফি আদনান।

লুনার ভিআর প্রকল্পের টিম লিডার আবু সাবিক মাহদী বলেন, তাঁরা নাসার তথ্য ব্যবহার করে একটি অ্যাপ তৈরি করেছেন। তাঁদের প্রকল্পটি মূলত নাসার তথ্য ব্যবহার করে ভিআর উপাদান তৈরি। এতে ভার্চ্যুয়াল রিয়্যালিটি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারকারী চাঁদে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা পাবেন। নাসার সরবরাহ করা বিভিন্ন উপাদান থেকে থ্রিডি মডেল ও তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা। নাসা অ্যাপোলো ১১ মিশনের ল্যান্ডিং এরিয়া ভ্রমণ, চাঁদ থেকে সূর্যগ্রহণ দেখা এবং চাঁদকে একটি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আবর্তন করা—এই তিন ভিন্ন পরিবেশকে ভার্চ্যুয়ালভাবে তৈরি করেছে টিম অলিক। তারা গত অক্টোবর মাসে দেশে আয়োজিত ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রথম দিকে থ্রিডি অ্যানিমেশন নিয়ে কাজ করলেও পরবর্তী সময়ে গেম, ভিজুয়াল ইন্টারঅ্যাকটিভ ও ভার্চ্যুয়াল রিয়্যালিটির প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ে।এর আগে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে বিশ্বের ৭৯টি দেশের ২ হাজার ৭২৯টি দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের দুটি ক্যাটাগরির শীর্ষ চারে উঠে আসে বাংলাদেশ।

এ প্রসঙ্গে ডাক, টেলিযোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মিত হচ্ছে আমাদের তরুণদের হাত ধরে। এতে আমরা খুশি। আমি টিম অলিক এবং বেসিসকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এ অর্জন ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার আরেকটি অনন্য দৃষ্টান্ত।’

বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যই ছিল গত তিন আসরের তুলনার ভালো করার। প্রথমবারের মতো নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে জয়ী হওয়া বড় অর্জন। এতে আরেকটি বড় মাইলফলক অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।’ নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০১৮–এর আহ্বায়ক দিদারুল আলম বলেন, এ অর্জন গোটা বাংলাদেশের। টিম অলিক বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। সবার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।

টিম অলিকের দলনেতা বলেন, ‘প্রথমবারের জয়ী হওয়ায় আমি আমাদের মডারেটর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী এবং বেসিসের প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশকে আরও উঁচুতে নিতে চাই।’

এবার চতুর্থবারের মতো নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের হ্যাকাথন অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের সহযোগিতায় ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে গত অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় এ প্রতিযোগিতা। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের ২৫০টি শহরে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। বেসিস বাংলাদেশের নয়টি শহরে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা) এ আয়োজন করে। -প্রথম আলো


শর্টলিংকঃ