নির্বাচন নিয়ে ইস‌্যু বানানো চেষ্টা করছে বিএনপি: কাদের


ইউএনভি ডেস্ক:

সরকারের পদত্যাগ চেয়ে নির্বাচনের দাবি তুলে বিএনপি ইস‌্যু বানানোর চেষ্টা করছে বলে মন্তব‌্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।সোমবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারির বাসভবন থেকে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।


বিএনপির নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের আজকে যে উন্নয়ন-অর্জন তা শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও প্রশংসিত হচ্ছে। শেখ হাসিানর নেতৃত্বে বাংলাদেশে এখন বিশ্ব সমাজে সমীহ আদায় করা সম্ভাবনাময় দেশ। জনগণ এখন উন্নয়ণমুখী। সবার চোখে মুখে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়।’

‘যে কোনো অপশক্তির ষড়যন্ত্র জনগণ নসাৎ করে দেবে। বিএনপি কোনো ইস্যু খুঁজে না পেয়ে নন ইস্যুকে ইস্যু বানানোর অপচেষ্টা করে। কখনো কোটা আন্দোলন, কখনো কোটাবিরোধী আন্দোলনে ভর করে। সর্বশেষ ধর্ষণবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে ভর করে সরকারের পদত্যাগ চেয়েছিল, যা হালে পানি পায়নি। এবারও তারা ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থতা থেকে তাদের কোনো শিক্ষা হয়নি।’

দাবি জানানোর প্রয়োজন নেই, সময় এলে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে বলে জানান তিনি। রাজপথে আন্দোলন ঢেউ গড়ে তোলা হবে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা জানতে চাই, ফখরুল সাহেব যা বলেন তা নিজে বিশ্বাস করতে পারেন কি না।’

‘আন্দোলনের ঢেউ তারা টেমস নদীর পাড় থেকে গুলশান অফিসে তুলতে পারেন। কিন্তু পদ্মা, মেঘনা, যমুনা বিধৌত মুজিবের বাংলায় নয়। তাদের আন্দোলনের হাঁক-ডাক আষাঢ়ের আকাশের মতো সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে যতোটা গর্জে বাস্তাবে বা রাজপথে ততটা বর্ষে না।’

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে বিএনপির বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই বলে বারবার পুরোনো অভিযোগ করে চলছে। সরকার নাকি ভিন্নমত সইতে পারে না। এদেশের আওয়ামী লীগ পরম সহিষ্ণু তা নিয়ে কাজ করছে। এজন্যই বিএনপি অনবরত মিথ্যাচার করতে পারছে।’

‘আমরা জানতে চাই, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনবরত রাষ্ট্রবিরোধী প্রচার কি ভিন্নমত? নাকি রাষ্ট্রকে দুর্বল করা? রাষ্ট্রের ভাবমুর্তি নষ্ট করা, দিনরাত দেশে-বিদেশে বসে অবিরাম ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক, মিথ্যাচার আর গুজব ছড়ানো কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা? না কি প্রবাসের অবস্থানকারী লাখ লাখ বাংলাদেশের জীবন-জীবিকা নড়বড়ে করে তোলা।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশের গণমাধ্যম নিজস্ব পলিসি অনুযায়ী প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। ভীতিকর কোনো পরিবেশ নেই। সরকারের সমালোচনা হচ্ছে। আপনারাও অশ্রাব্য ভাষায় প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত গালিগালাজ করছেন। কারো ওপর কোনো চাপ নেই। সরকার সমালোচনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার সেই সৎ সাহস শেখ হাসিনার রয়েছে। কোন গণমাধ্যমের ওপর সরকার সমালোচনার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে সেটা আপনার পরিস্কার করে বলেন।’

বিএনপির সরকারের শাসনামলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্বের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ওই সময়ে সাংবাদিক হত্যার বিচার তো হয়নি। বিচারের নামে হত্যাকারীকে রক্ষা করা হয়েছে। তাদের মুখে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা আসলে ভুতের মুখে রাম রাম। ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের ৩ মাসে ৫০ জন সাংবাদিক তাদের আক্রমণের শিকার হয়েছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণতন্ত্র এক টাকার বাই সাইকেল নয়, এটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ কাঠামো, সরকারের পাশাপাশি বিরোধীদলের গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’


শর্টলিংকঃ