পদ্মার চরে গড়ে উঠছে রিভার সিটি


নিজস্ব প্রতিবেদক:

নব্বই দশকের শেষনাগাদও রাজশাহীর সামনে পদ্মায় পানিপ্রবাহ গভীর আর বহমানই ছিল। নগরীর কোল ঘেঁষে পদ্মার নাব্যতার কারণে নৌচলাচল যেমন সচল ছিল তেমনি মৎস্য আহরণও ছিল সন্তোষজনক। মাত্র দুই দশকের ব্যবধানে পদ্মা এখন মৃতপ্রায়। নগরপ্রান্ত থেকেও পদ্মা সরে গেছে অনেক দূরে।

জেগে ওঠা চর এখন সবুজ ফসলের উর্বর ভূমি। এই জেগে ওঠা ভূমিতেই চলছে রাজশাহীর রিভার সিটির জল্পনা-কল্পনা। শুরু হয়েছে রিভার সিটি গড়ে তোলার তোড়জোড়। চলছে সমীক্ষা।

রাজশাহীর সিটি মেয়র গত নির্বাচনের আগে তার প্রচারণায় রিভার সিটির ধারণাটি নগরবাসীর কাছে তুলে ধরেন। রিভার সিটিকে ঘিরে দ্রুত বর্ধনশীল নগরায়ণ ও এর ফলে রাজশাহীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে-এমন আশাবাদও মেয়রের।

বৃহস্পতিবার মার্স ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাঈদ চৌধুরীসহ একটি কারিগরি প্রতিনিধি দল উজানে টি-গ্রোয়েন থেকে শুরু করে ভাটিতে তালাইমারী পর্যন্ত পদ্মা তীরবর্তী চরভূমি পরিদর্শন করেন।

এ দলের সঙ্গে ছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে রাসিকের একটি প্রতিনিধি দলও। তারা রিভার সিটির ধারণা ও বাস্তবতা সরেজমিন ঘুরে দেখেন। পরে নগর ভবনে মতবিনিময়ও করেন।

রাসিকের প্রতিনিধি দলে থাকা প্রধান প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি অনেক দিন ধরেই আলোচনায় আছে। পদ্মার নগরপ্রান্তে জেগে উঠা চরভূমিতে এখন স্থায়ীভাবে নানা ধরনের ফসলের চাষ হচ্ছে। পদ্মা নগরপ্রান্ত থেকে তিন থেকে চার কিলোমিটার বাহিরে চলে গেছে। নগরসংলগ্ন এই উঁচু চরভূমি এখন নগরীর অংশ হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, উজানে টি-গ্রোয়েন থেকে ভাটিতে শ্যামপুর পর্যন্ত এই উঁচু চরভূমির দৈর্ঘ্য ১১ কিলোমিটার। চওড়াও প্রায়ই এক কিলোমিটারের বেশি। গত ২০ বছর ধরেই পদ্মার বুকে জেগে ওঠা এই চরভূমি স্থায়ী ভূমি হিসেবে রয়েছে। নগরপ্রান্তে পদ্মার ভাঙন সৃষ্টিরও আর কোনো আশঙ্কা নেই। ফলে এখানে পরিকল্পিতভাবে রিভার সিটি হতে পারে। রিভার সিটিকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যিক হাবও তৈরি হবে। প্রতিষ্ঠা পাবে বিনোদন ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। আবাসনের কারণেও এই উঁচুভূমি খুবই উপযুক্ত ও পরিবেশ অনুকূল হবে। ফলে রিভার সিটি বহুমুখী প্রকল্পটি তিনি এগিয়ে নিতে চান। বিদেশে এমন জায়গায় বিলাসবহুল নগর গড়ে উঠেছে।

রিভার সিটি সম্পর্কে রাসিক মেয়র লিটন বলেন, পদ্মার বিশাল চরভূমি উন্নয়ন করে রিভার সিটি গড়ে উঠবে। ঢাকার পূর্বাচলের মতো সম্ভাবনাময় আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা গড়ে উঠবে। মার্স ইন্টারন্যাশনাল ভূমি উন্নয়নের বিষয়ে আগ্রহী। আমরা সরকারিভাবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হবে। এ সিটিকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক নৌবন্দরও গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে। এই পথে ভারত থেকে পণ্য আমদানি রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সমীক্ষা শুরু হয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে তা সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হবে। রিভার সিটি হবে উত্তরাঞ্চলের অভিজাত আবাসিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র।মেয়র বলেন, রিভার সিটি হলে রাজশাহীতে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।


শর্টলিংকঃ