পদ্মার পানি: আল্লাহ-আল্লাহ করা ছাড়া কোন উপায় নাই!


মেহেদী হাসান, রাজশাহী

‘বড় কষ্টে আছি সোনা, কেউ খোঁজ খবর নিতে আসেনি। গরু-বাছুর নিয়ে বিপদে পড়ছি। তার মধ্যে ছোট মেয়েকে নিয়ে আছি বিপদে, কখন পানিতে নামে! আর ডুবে মরে। আল্লাহ- আল্লাহ করা ছাড়া কোন উপায় নাই।’এভাবে বলছিলেন পদ্মাচর সংলগ্ন সাত নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সেবিকা বানু।

 

বাড়ন্ত পদ্মার পানি, ছবি: মেহেদী হাসান

পদ্মার পানি বাড়ার কারণে চরের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে । অনেক পরিবার ঘরছাড়া হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে তারা এসে গেছে রাস্তার উপরে। পানি এসে গেছে তাদের ঘরের দোরগোড়ায়। মানবেতর জীবনযাপন করছেন মানুষগুলো।

সাত নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া বলেন, ১৫ দিন আগে বলছি আমাদের সমস্যার কথা। পদ্মায় বাড়ি ঘর চলে গেছে। পাঁচজন মানুষ, তার সাথে গরু-ছাগল নিয়ে রাস্তায়। এখন চরম কষ্টে আছি। কাল রাতে কমশিনার এসছিলেন।

ক্ষোভ প্রকাশ করে একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাজন আলী বলেন, চরে কৃষি কাজ করতাম। এখন ডুবে গেছে, বেকার বসে আছি। নিচে যাদের বাড়ি ডুবে গেছে তারা রাতে এর বাড়িতে থাকছে। ওয়ার্ড কমিশনার এসে দেখে গেছে কাল রাতে। আশার কথা কিছু বলে যায়নি। এখন পড়ছি চরম দুশ্চিন্তায়। নিজেদের জায়গা হয়না তার ওপর বাড়ি হারাদের জায়গা দিতে হচ্ছে।

সাত নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার মতিউর রহমান ইউনিভার্সাল নিউজকে বলেন, গতকাল দেড় ঘন্টা ওখানে ছিলাম। যে সব বাড়ি ডুবে গেছে তাদের ডেকে কথা বলেছি। মৎস্যজীবীদের ভিজিএফ সহযোগিতা দেওয়ার কথা চলছে । বর্তমানে একটি তালিকা করা হয়েছে। আমার জানামতে চার থেকে পাঁচটি বাড়ি পানিতে ডুবেছে। ৩০ জনের একটি লিস্ট করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের যারা এখন বেকার অবস্থায় আছে তারা মাছ পাচ্ছেন না তাদের লিস্ট করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ৬ টি ডুবে যাওয়া বাড়ি এবং অন্যান্য পরিবারের জন্য সিটি করপোরেশন দুর্যোগ ও ত্রাণ সহযোগিতা খাত থেকে সাহায্য দেওয়া হবে। গোয়ালঘরে গরু রেখে নিজে বাইরে আছে চরম দুশ্চিন্তায়। এই জিনিসটা আমি সরজমিনে গিয়ে দেখেছি এবং বরাবর সেখানে যাচ্ছি ।

আবহাওয়া অফিস ইউনিভার্সাল নিউজকে বলেন, আগামী ৩ তারিখ পর্যন্ত এ আবহাওয়া থাকতে পারে। এছাড়া তেমন কোন দূর্যোগের সম্ভাবনা নেই। রাজশাহীর আবহাওয়া ভাল।

অপরদিকে ব্যবসায় মন্দা শহরের সর্বত্রই । আবহাওয়ার কারণে মানুষ বের হতে পারছেনা। বেচাবিক্রি নেই । মানুষের মনে শান্তি নেই। পানি উঠে গেছে আমাদের ক্যান্টিনের ভিতরে বলছিলেন সীমান্ত অবকাশ ক্যান্টিনের মোহাম্মদ মিলন শাহিন । একইসাথে দেখা যায় বিজিবি সীমান্ত নোঙ্গর ক্যান্টিনের অবস্থা।


শর্টলিংকঃ