পদ্মা ড্রেজিংয়ের অর্ধেক কাজ না হতেই প্রকল্পমেয়াদ শেষ!


বিশেষ প্রতিবেদক :

এই প্রকল্পের চার ভাগের তিনভাগ টাকাই ফেরত গেছে মন্ত্রণালয়ে। আর বাকি টাকা পড়েছে পানিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারী টাকার অপচয় ঠেকাতে নদী শাসনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পগুলোর মেয়াদের দিকে সতর্ক নজর রাখা জরুরি।

রাজশাহী নগরীর বুলনপুর থেকে সোনাইকান্দি এলাকা পদ্মার ভাঙন হতে রক্ষায় একটি প্রকল্প হাতে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।এ প্রকল্পের আওতায় পদ্মার ৬কিলোমিটার চর কেটে নাব্য ফেরাতে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হয় চলতি বছরের এপ্রিলে। তখন পদ্মায় পানি ছিল কম।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব ড্রেজারে কাজ চলে প্রায় আড়াই মাস। কিন্তু অর্ধেকেরও কম কাজ শেষ হওয়ার আগেই উজান থেকে পানির ঢল আসা শুরু হয়। এতে ফুলেফেঁপে ওঠে পদ্মার বুক।

ফলে কাজ গুটিয়ে নিয়ে বাধ্য হয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। পদ্মায় ড্রেজিংয়ের জন্য এই প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছিল ১৬ কোটি টাকা। এরমধ্যে ২ হাজার ৭০০মিটার ড্রেজিং হয়েছে। এতে খরচ দেখানো হয়েছে ৪কোটি ১৪লাখ টাকা। প্রকল্পের বাকি টাকা ফেরত গেছে।

এবিষয়ে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম জানান, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের সামনে অংশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব ড্রেজার দিয়েই কাজ চলছিল।

কিন্তু পদ্ময়ি আগাম পানি চলে আসায় কাজ গুটিয়ে নিতে হয়েছে। ইতোমধ্যে জুনে প্রকল্প মেয়াদও শেষ হয়েছে। তবে মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে মন্ত্রণায়লয়ে।

সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাত খান বলছেন, ‘উজান থেকে আসা পলিতে পদ্মার বুক অন্তত ২০মিটার করে ভরাট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় মাত্র ৬ কিলোমিটার ড্রেজিং করে প্রবাহ ফেরানোর চেষ্টা কেবলই লোকদেখানো’।

সরকারের পানি বিষয়ক টাস্কফোর্সের সদস্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী সারোয়ার জাহানের মতে, অসময়ে কাজ শুরু করায় গচ্চা গেছে প্রকল্পটির মোটা টাকা।

তাই সরকারী টাকার এমন অপচয় রোধে নদী শাসনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে উপযুক্ত সময় বেছে নেয়া জরুরি।তা না হলে সরকারের কেবল টাকাই খরচ হবে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবে না।


শর্টলিংকঃ