- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য দায়িত্বশীল হওয়া উচিত



মানুষ সামাজিক জীব। মানুষের সামাজিক জীবনে পরিবেশের ব্যাপক প্রভাব আছে। সুন্দর জীবন যাপনে প্রয়োজন ভারসাম্য ও সুন্দর পরিবেশ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মানুষের অপরিকল্পিত কর্মকান্ড, জনসংখ্যার আধিক্য , অসচেতনতার কারণে দিন দিন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপরন্তু বন্যা, খরা, টর্নেডো, ঘূর্ণিঝড় এখন মানুষের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। গাছপালা কমে যাওয়ার ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে। ফলাফল স্বরূপ এ বছর গড় তাপমাত্রা ইতঃপূর্বের চেয়ে অনেক বেশি অনুভিত হচ্ছে।

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের এ প্রভাব পড়ছে জাতীয় জীবন ও কৃষি উৎপাদনে। বাংলাদেশ এক সময় প্রকৃতির উপর নির্ভর করেই বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হতো, বর্তমানে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। অনাবৃষ্টি ও হটাৎ অতিবৃষ্টির কারণে কৃষি উৎপাদন এখন অনিশ্চিত। এমন চলতে থাকলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা অসম্ভব হয়ে যাবে। ভয়াবহ এ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ খুঁজলে পাওয়া যায় অপরিকল্পিত নগরায়ন, বৃক্ষ নিধন, যানবাহনের কালো ধোয়া, কলকারখানার ধোয়া, ইট ভাটার অবস্থান, অপরিকল্পিত জ্বালানি ব্যাবস্থাপনা ইত্যাদি।

১৯৯২ সালে রিও-ডি-জেনিরোতে অনুষ্ঠিত ধরিত্রী সম্মেলনে উন্নত দেশগুলো কিভাবে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে তা নিয়ে আলোচনা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫ শতাংশ কিন্তু এই যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর খনিজ জ্বালানির ২৫ শতাংশ ব্যবহার করছে এবং বায়ুমন্ডলে মোট কার্বন ডাই-অক্সাইডের ২২ শতাংশ ছাড়ছে। এদিকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মোট জনসংখ্যা পৃথিবীর জনসংখ্যার প্রায় ৭৮ শতাংশ এবং তারা মোট জ্বালানির মাত্র ১৮ শতাংশ ব্যবহার করছে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার জন্য অনেকটা দায়ী উন্নত দেশগুলো।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দূর্যোগ এর প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তাহলে কৃষি জমির লবণাক্ততা বৃদ্ধি, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড় ও বজ্রপাত এসব বিপর্যয়ের ফলে প্রতি বছর আমাদের গুনতে হয় বিশাল অংকের আর্থিক ক্ষতি। বর্তমানে এ বিপর্যয়কে নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা মনে হয়।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা পরিবেশের ভারসাম্য একদিনে নষ্ট হয়না। তাই চাইলেই একদিনে তা ঠিক করাও সম্ভব না। এ বিপর্যয় মোকাবেলায় প্রয়োজন সমন্বিত কর্মপ্রচেস্টা। যেমন প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় সরকারকে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। বন্যা মোকাবেলায় নদীর নাব্যতা সংরক্ষণ সহ বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করতে হবে।

লেখক: খালিদ হাসান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়