Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকছে অনেক শিক্ষার্থীই


নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর বাগমারার কাঁঠালবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ফারজানা খাতুনের পথেই পা দিয়েছে আরেক পরীক্ষার্থী সেলিম রেজা (১৬)। পরীক্ষা খারাপ হওয়াতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। সে উপজেলার ঝিকড়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও মরুগ্রামের মেহের আলীর ছেলে। সাঁকোয়া উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাককেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিচ্ছিল।

অপরদিকে একই পথে পা বাড়িয়েছিল আরেক শিক্ষার্থী সুইটি খাতুন (১৬)। তবে পরিবারের লোকজনের সচেতনতার কারণে দ্রুত স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার পর বেঁচে গেলে এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। সুইটি খাতুন উপজেলার শ্রীপুর রামনগর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসি পরীক্ষা দিচ্ছে। সাঁইপাড়া গ্রামের নাজির উদ্দিনের মেয়ে। গণিত পরীক্ষা খারাপ হওয়ার কারণে সে বিষপানে আত্নহত্যার চেষ্টা করে। এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ফারজানা খাতুন নামের আরেক মেধাবী শিক্ষার্থী বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষার নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা খারাপ হওয়ার কারণে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করে।

পরিবারের সদস্য ও সহপাঠিরা বলেন, সেলিম রেজা গতকাল সাঁকোয়া উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে গণিত বিষয়ে পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষায় আশানুরুপ করতে পারেনি। কক্ষেও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। বাড়িতে এসে সে পরিবারের সদস্যদের বিষয়রি জানায়। রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে সে ঘরের বাইরে বারান্দায় চলে আসে। এসময় সে বারান্দার বাঁশের সঙ্গে রশি ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করে। সকালে পরিবারের লোকজন টের পেয়ে থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। বাবা মেহের আলী অভিযোগ করে বলেন, পরীক্ষা খারাপ ও মানসিক নির্যাতনের কারণে তাঁর ছেলে আত্মহত্যা করেছে।

অপরদিকে সুইটি খাতুন চলতি বছরে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় শ্রীপুর রামনগর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে অংশ নিয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী সে। গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত গণিত পরীক্ষায় আশানুরুপ জবাব দিতে পারেনি। এতে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে।বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যদের পরীক্ষা খারাপ হওয়ার বিষয়টি জানায়। সুইটি খাতুন এতে ভেঙে পড়েন। রাত আটটার দিকে পড়ার টেবিলে বসে বিষপান করে। কিছুক্ষণ পর তার মা ঘরে ঢুকেন। তার মুখ থেকে বিষের দুর্গন্ধ বের হওয়াতে সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে মেয়ের বিষপানের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের জানান।

অসুস্থ অবস্থায় দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। পরে পেট থেকে বিষ করেন চিকিৎসকেরা। বর্তমানে সে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে। কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা জানান, সুইটি খাতুন বেঁচে গেলেও এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। বিষপানের রোগীদের কমপক্ষে দুইদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। ঝুঁকিও থেকে যায়। মা রেনুকা বিবির সঙ্গে আজ বুধবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে কথা হয় তিনি বলেন, মেয়ে লেখাপড়ায় খারাপ ছিল না।

শিক্ষকেরা পরীক্ষায় খুব কড়াকড়ি করছেন। বেঁচে থাকলে খুশি। তবে আজকের অনুষ্ঠিত আইসিটি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। সুইটি খাতুন জানায়, বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার কড়াকড়ি ভাবে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। তবে আত্মহত্যার চেষ্টার জন্য অনুতপ্ত। এই ধরণের কাজ আর করবে না বলে জানায়।


Exit mobile version