Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

পরীক্ষা ছাড়াই আইসোলেশনে থাকা কিশোরীর মরদেহ হস্তান্তর


ইউএনভি ডেস্ক:

যশোর জেনারেল হাসপাতালে করোনা সন্দেহে আইসোলেশনে থাকা এক কিশোরীর মৃত্যুর পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই কিশোরীর মৃত্যু করোনা আক্রান্ত হওয়া কারণে হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত না হয়ে এভাবে ঝুঁকি নিয়ে মরদেহ সৎকারের ব্যবস্থা গ্রহণে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ওই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানান, পরীক্ষার বাইরে কোনও কিছুই শতভাগ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তবে, সিভিল সার্জনের দাবি, এই রোগীকে নিয়ে করোনা সংক্রান্ত শঙ্কা নেই।


হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকালে জ্বর, সর্দি-কাশি নিয়ে আসা ওই কিশোরীকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সোমবার ভোরে সে মারা যায়। মৃত্যুর পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা তথ্য জেনে নমুনা পাঠানোর প্রয়োজন নেই বলে জানিয়ে দেয়। এরই মাঝে আতঙ্কে কিশোরীর স্বজনরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজখবর নিয়ে শিশুটির স্বজনদের শনাক্ত করে দুপুরে তাদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

আইসোলেশন ওয়ার্ডে মারা যাওয়া শিশুর মরদেহ পরীক্ষা ছাড়া স্বজনদের কছে হস্তান্তর করা ঠিক হয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে যশোরে কর্তব্যরত কয়েকজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পরীক্ষা ছাড়া করোনার মতো ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহভাজনকে স্বজনদের কাছে দেওয়া মোটেও যুক্তিযুক্ত হয়নি। এর ফলে সোশ্যাল ট্রান্সমিশনের একটা শঙ্কা থেকেই যায়।

জানতে চাইলে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, ‘ওই কিশোরীকে হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ভর্তি করা হয়েছিল। তার নিউমোনিয়া প্রবলেম ছিল। আমরা আইইডিসিআরে বিষয়টি জানালে তারা নমুনা পাঠাতে নিষেধ করে। কেননা করোনা পরীক্ষার জন্যে ওই কিশোরীর বেশ কিছু নমুনা অনুপস্থিত ছিল। যেমন– তার বয়স ১২ বছর এবং সে কোনও বিদেশফেরত মানুষের সংস্পর্শে যায়নি।’

কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি রোগীর রক্ত পরীক্ষা ছাড়া বলা অসম্ভব। প্রত্যেক মানুষই যেকোনও রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। করোনা আক্রান্তের মৃত্যুতেও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। তাই নির্দিষ্ট রোগ শনাক্তে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোনও বিকল্প নেই।’

শনাক্ত ছাড়া মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরে কোনও শঙ্কা থেকে যায় কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে হলে পরীক্ষা করতেই হবে। আর করোনাভাইরাসের পরীক্ষা এখন ঢাকার বাইরে কেবল চট্টগ্রামে চালু হয়েছে। খুলনাতে চালু হতে এখনও সপ্তাহখানেক লাগবে। ওই শিশুর মরদেহ হস্তান্তরের সময় করোনা রোগী সৎকারের বিধিবদ্ধ নিয়মগুলো তার স্বজনদের বলে দেওয়া হয়েছে। যেমন– তারা যেন নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কমসংখ্যক মানুষ জানাজা এবং দাফনের সময় উপস্থিত থাকেন।’

এতকিছুর পরও সোশ্যাল ট্রান্সমিশনের শঙ্কা থাকছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে টেস্ট ছাড়া সন্দেহ কাটানোর কোনও বিকল্প পথ নেই।’

এ বিষয়ে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, ‘এই রোগীর ক্ষেত্রে কোনও ধরনের শঙ্কা নেই। কেননা তাকে যে চিকিৎসক দেখেছেন তার তথ্য মতে, কিশোরীটি নিউমোনিয়ায় মারা গেছে। এরপরও আইইডিসিআরের সঙ্গে তথ্য পর্যালোচনা করা হয়েছে। তারাও এই কিশোরী করোনা আক্রান্ত নয় বলে জানিয়েছে।’


Exit mobile version