পাঠ্যবই থেকে ইসলাম বিরোধী ‘বিবর্তনবাদ’ বাতিলের দাবি


ইউএনভি ডেস্ক:

নবম-দশম শ্রেণী থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ে ২০১৩ সাল থেকে শিক্ষার আধুনিকায়নের নামে নাস্তিক্যবাদি ধ্যান-ধারণার ‘বিবর্তনবাদ’ বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ এনে অবিলম্বে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খাঁ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী এই দাবি জানান।

লিখিত বক্তব্যে আল্লামা কাসেমী বলেন, পাঠ্যবইয়ে বিবর্তন শিক্ষার নামে নাস্তিক্যবাদি ধ্যান-ধারণার প্রতি উদ্দীপ্ত করে এবং আল্লাহর অস্তিত্ব, পরকাল ও ধর্মের প্রতি অবিশ্বাসী এবং ভোগবাদের প্রতি মোহাবিষ্ট করে তুলে- এমন পাঠ মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পড়ানো হচ্ছে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর সমাজ বিজ্ঞান বইয়ে ধর্মকে উল্লেখ করেছে ‘নিরক্ষর সমাজের সরল মানুষের চিন্তা- চেতনার ফসল’ হিসেবে।

তিনি বলেন, এই বিবর্তনবাদের শিক্ষা কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই যে গুরুতর আপত্তিকর এমন নয়, বরং পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ ডক্টরাল বিজ্ঞানী বিবর্তনবাদের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তারা নিশ্চিত করেছেন, পৃথিবীতে কখনো এভাবে বিবর্তনের মতো ঘটনা ঘটেনি। বিবর্তন ঘটে প্রজাতির বয়স, আকৃতি, বৈশিষ্ট্য-এর উপরে। কিন্তু বিবর্তনের দ্বারা নতুন প্রজাতির কখনো উদ্ভব হয় না।

পৃথিবীর প্রায় ৯৯% চিকিৎসা বিজ্ঞানী মানুষ ও বানরের পূর্বপুরুষ যে এক; এটা স্বীকার করেন না। কোষ বিজ্ঞান বা আণবিক বিজ্ঞান দ্বারা বিবর্তনকে প্রমাণ করা যায় না। বিবর্তন যদি কোন প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক বিষয়বস্তু হতো, তবে উন্নত দেশসমূহ যেমন- আমেরিকা, তুরস্ক, রুমানিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া প্রমুখ দেশে বির্বতন শিক্ষাকে বাতিল করা হতো না।

সংবাদ সম্মেলনে আল্লামা কাসেমী উদাহরণ দিয়ে বলেন, নবম-দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ের ১১২ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে- পৃথিবীর সব বিজ্ঞানীকে নিয়ে একবার একটা জরিপ নেয়া হয়েছিল, জরিপের বিষয়বস্তু ছিল পৃথিবীর নানা বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ কোনটি। বিজ্ঞানীরা রায় দিয়ে বলেছিলেন, বিজ্ঞানের সর্বশ্রেষ্ঠ তত্ত্ব হচ্ছে ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব। কত ভয়ংকর ভুল তত্ত্ব আমাদের সন্তানদেরকে পড়ানো হচ্ছে।

আল্লামা কাসেমী আরও বলেন, ২০১৩ সালের পর থেকে গত ৬ বছর ধরে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতকোত্তর স্তরে বিবর্তনবাদ পড়ানো হচ্ছে। যার কারণে ইতিমধ্যেই আমরা লক্ষ্য করছি, দেশের তরুণ শিক্ষিত শ্রেণীর একটা অংশের মধ্যে নাস্তিক্যবাদি চিন্তা-চেতনা প্রচুর বেড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অনতিবিলম্বে পাঠ্যবই থেকে ইসলামী আক্বিদা- বিশ্বাস এবং সংবিধান বিরোধী ‘বিবর্তনবাদ’ শিক্ষা বাতিলের জোর দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে ‘বিবর্তনবাদ’ অন্তর্ভুক্তির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জমিয়তের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, মাওলানা তফাজ্জুল হক আজীজ, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুতিউর রহমান গাজীপুরী, অর্থসম্পাদক মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন এবং দফতর সম্পাদক মাওলানা আব্দুল গাফফার প্রমুখ।


শর্টলিংকঃ