ওটিতে প্রসূতির মৃত্যু : পালানোর সময় ডাক্তারসহ আটক ২


নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা :
পাবনার চাটমোহরে একটি বেসরকারী ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় তাছলিমা খাতুন নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। অপারেশন টেবিলে রোগীকে রেখে পালানোর সময় চিকিৎসকসহ দুইজনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। মৃত তাছলিমা খাতুন চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের বোঁথড় গ্রামের ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী।

আটক ডাক্তার (সার্জন) সাদ্দাম হোসেন নীরব নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা। আটক আরেকজন ডাক্তারের সহকারী আসাদুজ্জামান। তবে ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু কৌশলে পালিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার তাছলিমা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য স্বজনরা তাকে চাটমোহর উপজেলা সদরের নারিকেলপাড়া মহল্লায় অবস্থতি ‘চাটমোহর ইসলামিক হাসপাতাল’ নামের বে-সরকারী ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে ডাক্তার সাদ্দাম হোসেন নীরব, তার সহকারি আসাদুজ্জামান, ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু এবং দু’জন নার্স মিলে অস্ত্রোপচার করেন এবং একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ট হয়।

এ সময় রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে অবস্থা বেগতিক দেখে ডাক্তার ও তার সহকারী পালানোর সময় তাদের আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী। তবে এর মধ্যে কৌশলে পালিয়ে যায় ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু।

এ ঘটনার পর রোগীর স্বজন এবং স্থানীয়রা উত্তেজিত হলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং তাছলিমা খাতুনকে আশংকাজনক অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ বায়েজীদ-উল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ওই ক্লিনিকে গিয়েছিলাম। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে রোগীকে সেলাই না করেই সবাই পালায়। পরে শঙ্কটাপন্ন অবস্থায় তাকে (তাছলিমা) পাবনা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ নাসীর উদ্দিন জানান, সাদ্দাম হোসেন এবং তার সহকারী আসাদুজ্জামানকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩ জুলাই ‘চাটমোহর ইসলামিক হাসপাতাল’ নামের এই ক্লিনিকেই এনেস্থেসিয়া চিকিৎসক ছাড়া রোগীর অস্ত্রোপচার এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অস্ত্রোপচারের কারণে ক্লিনিক মালিককে জরিমানা করা হয়। এছাড়া ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেয়া হয়। তবে কাউকে না জানিয়ে সিলগালা ভেঙ্গে আবারো ওই ক্লিনিকে অপারেশন শুরু করে ডাক্তার সাদ্দাম হোসেন এবং ক্লিনিক মালিক আমির হোসন বাবলু।


শর্টলিংকঃ