পিয়ন থেকে হঠাৎ কোটিপতি!


ইউএন ডেস্ক নিউজ:

পিয়ন থেকে হঠাৎ কোটিপতি বনে যাওয়া আব্দুল মান্নান তালুকদার

পিয়ন থেকে কোটিপতি হওয়া আবদুল মান্নান তালুকদার নিজ এলাকায় ফিরে এসেছেন। ডিসি অফিসের সাবেক এই পিয়নের (এমএলএসএস) বিরুদ্ধে চার বছরে আমানত দ্বিগুণ করে দেওয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এই টাকায় তিনি গড়ে তুলেছেন বেশ কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। তবে তার দুর্নীতি আর প্রতারণার বিষয়ে তদন্ত শুরু হলে পরিবারসহ দীর্ঘদিন গাঢাকা দিয়েছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) আবদুল মান্নানকে বাগেরহাটের ব্যবসায়িক অফিসে দেখা গেছে।। বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নেজারত শাখার সাবেক এই উমেদার দীর্ঘ ২৬ বছর চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে থেকে ২০১০ সালে স্বেচ্ছা অবসরে যান। এরপরই ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে বিত্ত বৈভব। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক তদন্ত প্রতিবেদনে আবদুল মান্নানের পিয়ন থেকে কোটিপতি হওয়ার তথ্য উঠে আসে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট নামে কোম্পানি খুলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অবৈধভাবে আমানত সংগ্রহ করেন আবদুল মান্নান। তার সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানটি শুধু উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়েই নয়, মানুষকে আকৃষ্ট করতে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক পরিচালিত ব্যাংকিংয়ের মতো লভ্যাংশ দেওয়ারও প্রস্তাব করে।

এ তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে। ভুক্তভোগিদের দাবি, নিউ বসুন্ধরা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি গড়ে তোলো চার বছরে অর্থ দ্বিগুণ হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন আবদুল মান্নান। তার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োহে মানুষকে তিনি প্রলুব্ধ করেছেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ দুটিসহ মান্নানের মালিকানাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস বিভাগের উদ্যোগে শিগগিরই এ তদন্ত শুরু হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের খুলনা অফিসের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিক নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদ সৃষ্টি করেছেন আবদুল মান্নান তালুকদার। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আবদুল মান্নান তালুকদার মানুষের কাছ থেকে অবৈধভাবে ২৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত দল।

এরমধ্যে আবদুল মান্নান নিজের নামে শুধু জমিই কিনেছেন ১৪৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার। এছাড়া ৬৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন তার মালিকানাধীন ছয়টি প্রতিষ্ঠানে। প্রায় ২ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে এই পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে খুলনা, নড়াইল, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকার সাধারণ লোকদের কাছ থেকে এই আমানত সংগ্রহ করা হয়।

আবদুল মান্নানের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট এবং নিউ বসুন্ধরা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনও তদন্তে নেমেছে। প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিস অ্যান্ড ফার্মস (আরজেএসসি) ও সমবায় অধিদফতরকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকেও অবগত করে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।#

সূত্র: পিবিডিনিউজ


শর্টলিংকঃ