পুঠিয়ায় আ’লীগে পৃথক কমিটি, সংঘাতের আশঙ্কা


আবু হাসাদ কামাল, পুঠিয়া :

রাজশাহীর পুঠিয়ায় স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদ চরম আকার ধারণ করছে। দলের বড় একটি অংশের নেতাকর্মীরা বর্তমান সাংসদ ডাঃ মনসুর রহমান ও সাবেক সাংসদ আব্দুল ওয়াদুদ দারার অনুসারী হিসাবে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। উপজেলা আ’লীগের দুটি ভাগের রয়েছে পৃথক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তবে দলের বড় একটি অংশকে অবহিত না করেই হটাৎ উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন আহবান করায় দলের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন তৃর্ণমূল নেতাকর্মীরা।

উপজেলা আ’লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে দলের নেত্কার্মীদের মধ্যে বিভেদ শুরু হয়েছে। সাবেক সাংসদের একলা চলরে নীতি ও দলীয় ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যোয়নই একমাত্র কারণ বলে নেতাকর্মীরা মনে করছেন। যার কারণে গত ২০১৩ সালে আ’লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কমিটি গঠন নিয়ে নেতার্মীরা ক্ষীপ্ত হয়ে উঠেনে। এতে কয়েকটি স্থানে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এরপর দলের নেতাকর্মীরা দু’ভাগে বিভক্তি হয়ে যায়। নানা কারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আব্দুল ওয়াদুদ দারার পরিবর্তে ডাঃ মনসুর রহমান দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন। এতে সাবেক সাংসদ দারা বিরোধী একটি বড় অংশ বর্তমান সাংসদ মনসুর রহমানের সাথে যুক্ত হয়েছেন।

গত এক বছর সাবেক সাংসদ এলাকায় না আসলেও বর্তমানে তিনি জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে আবারো এলাকায় আসা শুরু করেছেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারী তার অনুসারীদের নিয়ে উপজেলা সদরে একটি কমিনিটি সেন্টারে দলীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসাবে ডাঃ হাসমত দৌলাকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়। আর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেককে পূর্ণবহাল রাখেন। অপরদিকে বর্তমান সাংসদ ডাঃ মনসুর রহমানের নেতৃত্ব গত ২২ ফেব্রুয়ারী লস্করপুর ডিগ্রী কলেজে অপর একটি জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নেতাকর্মীরা বলেন, হটাৎ করে সাবেক সাংসদ দলের বড় একটি অংশকে অবহিত না করে সম্মেলন আহবান করেছেন। যা সাংগঠনিক নিয়ম ভর্হিভূত। এটা কখনোই মেনে নেয়া হবে না।

বর্তমান সাংসদ সমর্থিত উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, সাবেক সাংসদ ও উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ দারা মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় গত প্রায় এক বছর থেকে উপজেলা আ’লীগের কোনো রকম সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল না। দলীয় সংগঠন কোনো একক ব্যক্তির নিজেস্ব বিষয় নয়। তাই দলীয় কার্যক্রম ঠিক রাখতে জেলা আ’লীগের নির্দেশ মোতাবেক গত প্রায় ৬ মাস পূর্বে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতামতে আমাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করেন।

অপরদিকে দলীয় নির্দশনা অমান্য করায় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বহিস্কৃত হওয়ায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানকে তার দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা দ্বায়িত্ব নেয়ার পর নেতাকর্মীদের মতামতে দলীয় প্রার্থী দিয়ে উপজেলা ও দু’টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করা হয়েছে। বর্তমানে সাবেক সাংসদ জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় তার আর্বিভাব ঘটেছে। তিনি বর্তমান সাংসদ ও তৃর্ণমূল নেতাকর্মীদের মতামত উপেক্ষা করে আগামী ৬ মার্চ উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন ডেকেছেন। বিষয়টি নিয়ে বর্তমান সাংসদ কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে পরামর্শ করতে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি এলাকায় ফিরে আসলে দলীয় ভাবে চুডান্ত সিন্ধান্ত নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

সাবেক সাংসদ সমর্থিত অপর অংশের সদ্য ঘোষিত উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডাঃ হাসমত দৌলা বলেন, দলের মধ্যে কোনো রকম বিভক্তি রেখে সম্মেলন হোক সেটা আমি চাই না। যার কারণে আগামী ৬ মার্চ উপজেলা আ’লীগের ঘোষিত সম্মেলন এক মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এর মধ্যে আমি সাবেক ও বর্তমান সাংসদসহ সকল নেতাকর্মীদের এক কাতারে এনে সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষনা করবো।

এ ব্যাপারে সাবেক পুঠিয়া-দুর্গাপুর সাংসদ ও জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


শর্টলিংকঃ