পুঠিয়ায় ত্রাণ চাওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা নারী লাঞ্ছিত


পুঠিয়া প্রতিনিধি:

রাজশাহীর পুঠিয়ায় সরকারী ত্রাণ চাওয়ায় চেয়ারম্যানের কথিত প্রতিনিধি দ্বারা একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করলে চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের রোষানলে পড়েছেন ওই ভূক্তভোগি মহিলার পরিবার।

গত ৩ জুন বিকেলে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড পালোপাড়া-তাহেরের মোড় এলাকায় বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফ খান ঝন্টুর স্থানীয় কথিত প্রতিনিধি মোতাহার আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ভূক্তভোগি নারী চামেলী বেগম বলেন, আমার স্বামি একজন নরসুন্দরের কাজ করেন। করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন থেকে তার কাজ বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে আমিও আন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রয়েছি। শুনেছি অনেক লোকজন এই সংকট মুহুর্তে সরকারী অনুদান পেয়েছেন। আমি কিছু সহায়তা পাওয়ার আশায় চেয়ারম্যানের লোক মোতাহার আলীর বাড়িতে যায়। সেখানে গেলে তিনি বলেন, তুমি সরকারী সুবিধা পাবে না।

কেনো আমাকে ত্রাণ দেয়া হবে না জিজ্ঞাসা করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গলাধাক্কা দিয়ে তার বাড়ি থেকে বের করে বাহিরে আনেন। এরপর দড়ি দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে আমার হাত বাধার চেষ্টা করলে পাশের বাজারের লোকজন আমাকে উদ্ধার করেন। সে সময় ৬ বছরের মেয়ে সুমনা খাতুন আমার কাছে গেলে তাকেও গলা ধাক্কা দেয় সে।

ভুক্তভোগীর স্বামী শরীফুল ইসলাম বলেন, আমার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে শারীরিক লাঞ্চিত করায় ঘটনার দিন রাতে থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হয়। এ ঘটনার পরের দিন চেয়ারম্যান আমাকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে উল্টা গালিগালাজ করেছে। এছাড়া থানায় অভিযোগ দেয়ায় বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছেন। সংরক্ষিত ইউপি মহিলা সদস্য শাহারা বেগম বলেন, অন্তঃসত্ত্বা চামেলী বেগমকে লাঞ্চিত করার বিষয়টি আমি তৎক্ষনিক চেয়ারম্যান সাহেবকে অবহিত করেছি। এরপর এ বিষয়ে আর কোনো খোজ খবর পাইনি।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের কথিত প্রতিনিধি মোতাহার আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ত্রান দেয়ার মালিক আমি না। আমি শুধু চৌকিদারদের সাথে থেকে ত্রাণ বিতরণে সহায়তা করি। আর আমি ওই মহিলাকে কোনো মারধর করিনি। বরং ওই মহিলা ত্রাণ না পেয়ে আমাকে গালিগালাজ করেছে।

তবে সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ খান ঝন্টু ভূক্তভোগির পরিবারকে হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওই মহিলা ১০ টাকা কেজির ফেয়ার প্রাইজের চাউলের তালিকাভূক্ত। যার কারণে তাকে করোনা মহামারির এই সময় বিশেষ সহায়তা তাকে দেয়া হবে না। আর ওই মহিলা একটু খারাপ। তার বিরুদ্ধে এলাকাবাসিদের অনেক অভিযোগ আছে।

আর মোতাহার আলী একজন ভালো মানুষ সে আমাদের স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে কাজ করে। এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, সরকারী ত্রাণ চাওয়ায় চেয়ারম্যানের লোক একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে লাঞ্চিত করেছে এমন একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


শর্টলিংকঃ