Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

পুঠিয়ায় ভেজাল ফিস ফিড কারখানার সন্ধান


আবু হাসাদ কামাল, পুঠিয়া:

রাজশাহীর পুঠিয়ায় যত্রযত্র ভাবে গড়ে উঠেছে মাছের খাবার তৈরির ভেজাল ও অবৈধ কারখানা। কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকায় কারখানার মালিকরা চামড়া ট্যানারীর বর্জ্য ও মেয়াদ উত্তীর্ণ বিভিন্ন উপকরণ মিশ্রণে তৈরি হচ্ছে ফিস ফিড।

আর চাষিরা অল্প সময়ে মোটা তাজা করে মাছ গুলো বাজারজাত করছেন। ওই মাছ খেলে চরম স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।
জানাগেছে, মৎস্য চাষিদের ঘিরে অসাধু ব্যবসায়ীরা উপজেলার বাসা বাড়িসহ কয়েকটি স্থানে ভেজাল ফিসফিড কারখানা গড়ে তুলেছে। কারখানা গুলো থেকে প্রতিদিন মাছের বিভিন্ন প্রকার খাদ্য ও ওষুধ তৈরি করে চাষিদের মাঝে সরবরাহ করা হয়।

মালিকরা মাছের খাদ্য তৈরি করতে মানব দেহের ক্ষতিকারক চামড়া ট্যানারীর বর্জ্য, মেয়াদ উত্তীর্ণ শুটটি মাছের ডাস্ট, ডাউল, কাঠের গুড়া ও কেরোসিনসহ বিভিন্ন লিকুইড ব্যবহার করছে। যা বিএসটিআই কর্তৃক অনুমোদিত নয়। মাছের খাদ্য ভেজাল প্রতিরোধ করতে সম্প্রতি মাঠে নেমেছেন উপজেলা প্রশাসন। শনিবার (৪ জুলাই) দুপুরে শিলমাড়িয়া এলাকার বিদিরপুর গ্রামে অভিযান চালায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

সেখানে একটি বাড়িতে অবৈধ মাছের খাদ্য তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়া যায়। দেখা গেছে ওই কারখানায় মাছের খাদ্য তৈরিতে অবৈধ বিভিন্ন লিকুইডের পাশাপাশি কেরোসিন ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই অভিযোগে কারখানার মালিক ওই গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে আসাদুল ইসলামকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমান আদালত।

পরে ওই কারখানায় ব্যবহৃত প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার বিভিন্ন উপকরণ ধ্বংস করা হয়েছে। আর গত সপ্তাহে ধোপাপাড়া এলাকায় অবস্থিত এনাম ফিডমিল মালিক আতিকুর রহমানকে মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্য উপকরণ সংরক্ষন করার অপরাধে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। পাশাপাশি ওই কারখানার ২৫৫ বস্তা খাদ্য উপকরণ ধ্বংশ করার নির্দেশ দেন।

ভালুকগাছি এলাকার মাছ চাষি নবির উদ্দীন বলেন, বড় মাছ উৎপাদন ও তাজা সরবরাহে আমাদের এলাকার সুনাম রয়েছে। তবে অনেক চাষিরা অল্পদিনে মাছের আকার বড় করতে পুকুর গুলোতে ফিড ব্যবহার করছেন। আর ওই চাষিদের ঘিরে কিছু অসাধু লোকজন উপজেলার কয়েকটি স্থানে ফিস ফিড তৈরি করে বাজারজাত করছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষ ওই ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা না করলে আমাদের এই অঞ্চলের মাছ চাষের চরম বিপর্যয় ঘটবে।


অপরদিকে শিলমাড়িয়া এলাকার একটি বাড়িতে মাছের ভেজাল খাদ্য তৈরির কারখানা সন্ধান পাওয়া গেছে। ওই কারখানায় মাছের খাদ্য তৈরিতে বিভিন্ন লিকুইডের পাশাপাশি কেরোসিন ব্যবহারের আলামত পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কারখানার মালিককে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই ভেজাল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ উপকরণ গুলো ধ্বংস করা হয়েছে। আর ভেজাল বিরোধী এই অভিযান অব্যহত থাকবে।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য বলেন, মাছের খাদ্য তৈরিতে ট্যানারীর বর্জ্য, মেয়াদ উত্তীর্ণ শুটটি মাছের ডাস্ট, ডাউল, কাঠের গুড়া, কেরোসিনসহ যে সকল লিকুইড ব্যবহার করছে তা মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। এই খাদ্যতে উৎপাদিত মাছ খেলে মানবদেহের লিভার জন্ডিস ও ক্যান্সারসহ নানা রোগে আক্রান্তত হওয়া ঝুকি থাকে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ওলিউজ্জামান বলেন, মাছের খাদ্য ভেজাল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ উপকরণ ব্যবহার করায় সম্প্রতি এনাম ফিড মিলকে অর্থদন্ড করা হয়েছে।


Exit mobile version