পুঠিয়ায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে নকল ক্রীম কারখানা


প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়নি তিন বছরেও

আবু হাসাদ কামাল,পুঠিয়া:

সরকারী নির্দেশনা থাকলেও রাজশাহীর পুঠিয়ায় রং ফর্সাকারী ভেজাল ও নামিদামী দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল কসমেটিক তৈরির কারখানা গুলো বন্ধ হয়নি।

অবৈধ ওই কারখানায় গুলো বন্ধ করতে গত তিন বছর পূর্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশ দেয় হয়। কিন্তু তিন বছর পেরিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে এখনো তার বাস্তবায়ন হয়নি।

এলাকাবাসীদের অভিযোগ, কারখানার মালিকরা স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে বিশেষ যোগাযোগ রাখায় ওই ভেজাল প্রসাধনী উৎপাদন বন্ধ হচ্ছে না।
জানা গেছে, কিছু অসাধু ব্যক্তি দীর্ঘ কয়েক বছরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মানব দেহের ক্ষতিকারক রং ফর্সাকারী নকল ও ভেজাল প্রসাধনী উৎপাদন করে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে সারা দেশে বাজারজাত করছে।

ওই প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে মানবদেহে ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ছে। যার কারণে ২০১৭ সালের ১৬ মে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের যুগ্ম সচিব ফরিদ আহম্মদ স্বাক্ষ্মরিত একটি পরিপত্র জারি করেন। পরে একই পরিপত্রটি জেলা প্রশাসক এবং পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করা হয়। যার স্বারক নং-০৩.০৭৯.০১৬.০৪.০০.২৬.২০১৬-৫৩৪ (৪)।

ওই পত্রে ১২টি ভেজাল ও অবৈধ ক্রীম কারখানার নাম উল্লেখ করা হয়। এ গুলো হচ্ছে মর্ডাণ হারবাল, রুপসী গোল্ড, মেডনা স্পট ক্রীম ও হারবাল, চ্যালেঞ্জার হারবাল ও প্রসাধনী, ডিজিটাল হারবাল, সীনা স্পট ক্রীম, রোমাঞ্চ হারবাল ও স্পটক্রীম, ডায়মন্ড স্পট ক্রীম, ঝিলিক সলিসন, লাউস ষ্টার গোল্ড ও আইকন হারবাল, লাকি সেভেনস্পট ক্রীম এবং জ্যোতি বিউটি হারবাল।

পত্রে উল্লেখ করা হয়, ক্রীম কারখানার মালিকরা বিএসটিআই কর্তৃক নামমাত্র দু’একটি পণ্য উৎপাদনের অনুমোদন নিয়েছে। পরে কারখানার মালিকরা গোপনে কসমেটিক তৈরি করে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে বিক্রি করছে। কারখানার মালিকরা মানব দেহের ক্ষতিকারক স্টিলম্যান, টিয়ারিক এসিড, আইসোপ্রোপাইল, মাইরিস্টড, সাধারন পানির মিশ্রণে রং ফর্সাকারী ক্রীম ও বিভিন্ন প্রসাধনী তৈরি করছে। এ সকল পণ্য ক্রয় করে বিভিন্ন বয়সী নারীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও পাশাপাশি বিভিন্ন চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

পরিপত্রে আরো বলা হয়, স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনসহ রাজনৈতিক নেতারা প্রসাধনী কারখানার মালিকের নিকট থেকে সুবিধা নিয়ে আসছে। যার কারণে ওই অসাধু ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ওলিউজ্জামান বলেন, যেখানেই ভেজাল প্রসাধনী উৎপাদন করা হয় সেখানেই আমরা অভিযান চালাচ্ছি। আর ওই কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে বিগত দিনে ওই কারখানা গুলো বন্ধে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কোনো পরিপত্র এসেছিল কিনা সেটা আমার জানা নেই। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।


শর্টলিংকঃ