পুঠিয়ায় ভেজাল খাদ্যে সয়লাভ; ক্রেতারা অসহায়


আবু হাসাদ, পুঠিয়া :

রাজশাহীর পুঠিয়ায় খাবার হোটেল ও দোকানপাট গুলোতে ক্রমেই বাড়ছে ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যে দ্রব্যর সরবরাহ। যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাবে সাধারন মানুষ প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্যে রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভেজাল কারবারী ও ব্যবসায়ীদের সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য স্যানেটারি পরিদর্শকের বিশেষ সমঝোতা থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
জানা গেছে, পৌরসভা ও উপজেলা এলাকায় ছোট-বড় হাট বাজার রয়েছে ১৫টি। বিভিন্ন খাদ্যপণ্যে তৈরির বেকারী রয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক।

দু’হাজারের অধিক বিভিন্ন প্রকার খাবারের দোকান। এ ছাড়া ছোট-বড় মুদি দোকান রয়েছে প্রায় তিন হাজার। স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ওই দোকানপাট গুলোতে সার্বক্ষনিক খাদ্যের মান দেখা শুনার দ্বায়িত্ব থাকলেও এখানে তা করা হচ্ছে না। ব্যবসায়িরা খাদ্য পরিদর্শকের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখায় তিনি দোকান গুলোতে কোনো প্রকার খোজ খবর রাখছেন না। যার কারণে দোকানপাট গুলো থেকে প্রতিনিয়ত ভেজাল বাসি-পচা ও অতি নিন্ম মানের খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।

পুঠিয়া সদর এলাকার আমিনুল হক অভিযোগ তুলে বলেন, প্রতিটি দোকানের পরিবেশ অত্যন্ত খারাপ অবস্থা রয়েছে। আর খাবার হোটেল গুলোতে খোলা অস্থায় ধুলা-বালিযুক্ত ও অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। স্যানেটারি পরিদর্শক প্রতিনিয়ত খাবার দোকান গুলোতে যাতায়ত করলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে সব সময় মাসোয়ারা পাচ্ছেন।

বানেশ্বর এলাকার পথচারিরা বলেন, দুর্গন্ধে হাটের কশাই খানা ও মাছ বাজার গুলোতে প্রবেশ করার মতো কোনো অবস্থা নেই। বেশীর ভাগ কশাইরা গভীর রাতে রোগাক্রান্ত পশু জবাই করে সকালে ভালো গরুর মাংশ বলে বিক্রি করছে। এ ছাড়া মুদি দোকান গুলোতে ভেজাল তেলসহ বিভিন্ন পণ্যেগুলো ভালো বলে বিক্রি করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকানীরা বলেন, খাদ্য সামগ্রী আমরা পাইকারী কিনে খুচরা বিক্রি করি। অনেক সময় নানা জটিলতার কারণে আমরা দোকান ঘর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে পারি না। তার উপর সঠিক সময়ে দোকানের সে গুলি বিক্রি করতে না পারলে এর গুনগত মান কতটুকু কমে সেটা জানা নেই। তবে আমাদের ধারনা সে গুলো খাওয়ার উপযোগি থাকে। খাদ্য সামগ্রী গুলো পরীক্ষা নিরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, ঠিকমত টাকা দিলে স্যানেটারি কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করেন না।

হাট-বাজারের কশাইরা বলেন, প্রতিদিন গরু-ছাগলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে সনদ নেয়া একটা ঝামেলার কাজ। তাই পরীক্ষার জটিলতা এড়াতে স্যানেটারি অফিসারকে আমরা প্রতিটি গরুর জন্য ৫শ’ টাকা এবং ছাগলের জন্য দেড়শ’ টাকা করে দিলে সব ঝামেলা শেষ।

পৌরসভা স্যানেটারি পরির্দশক মামুন-অর রশিদ বলেন, পৌরসভা এলাকাতেও স্যানেটারি পরির্দশক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা স্যানেটারি পরির্দশক হাফিজুর রহমান।

এ বিষয়ে উপজেলা স্যানেটারি পরিদর্শক হাফিজুর রহমান হাফিজ মাসোয়ারার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, খাদ্য ভেজালের অভিযোগ পেলে আমরা সেখানে অভিযান চালিয়ে থাকি। আর খাদ্য ভেজাল দেওয়ার কারণে অনেক ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করা হয়েছে।


শর্টলিংকঃ