পুঠিয়ায় মন্দিরের সামনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরির প্রস্তাবে সমালোচনার মুখে মেয়র


আবু হাসাদ, পুঠিয়া :

রাজশাহীর পুঠিয়ায় মন্দিরের সামনে সড়ক ও জনপদের জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরির ঘোষনা দেয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে রয়েছেন পৌর মেয়র বরিউল ইসলাম রবি।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, আগামী দিনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক সম্প্রসারণ করলে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি যেমন ভাঙ্গা পড়বে, তেমন মন্দিরের সামনে ম্যুরাল তৈরি হলে সাম্প্রদায়িক সমস্যার সৃষ্টির আশঙ্কাও থাকবে।

জানা গেছে, পৌরসভার ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডে পানি নিস্কাশনের কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা চরম জনদূর্ভোগ দেখা দেয়। জলবদ্ধতা নিরসন করতে এবার ৮নং ওয়ার্ড এলাকার মহাসড়কের পাশে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করে কাঁচা ড্রেন তৈরির কাজ হাতে নেয় পৌরসভা। দোকানপাট উচ্ছেদের পর সম্প্রতি পুঠিয়া সদরের তাহেরপুর সড়ক মোড়ে সড়ক ও জনপদের জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরির প্রস্তাব করে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয় পৌরসভা। যা কাঁঠালবাড়িয়া শিববাড়ি সর্বজনিন মন্দিরের সামনে। যার কারণে স্থানীয় লোকজন নানা আলোচনা সমালোচনা শুরু করেছেন।

কাঁঠালবাড়িয়া শিববাড়ি সর্বজনিন মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নিধুরাম দাস বলেন, মন্দিরের সামনে মহাসড়ক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা। মহাসড়কটি সম্প্রসারণ ও পানি নিস্কাশনের ড্রেন চালু হলে মন্দিরের সামনে আর কোনো জায়গা থাকবে না। এর মধ্যে যদি মেয়র সাহেব সামনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরি করেন তবে মন্দিরের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হবে। এখান থেকে মাত্র ২শ’ মিটার দুরে উপজেলা পরিষদ। সম্প্রতি সেখানে বঙ্গবন্ধুর একটি বিশাল ম্যুরাল তৈরি করা হয়েছে। আমরা বিশেষ দিন গুলিতে তাকে শ্রেদ্ধা জানাতে সেখানেই যাব। মন্দিরের সমস্যা সৃষ্টি করে এখানে ম্যুরাল তৈরি কি খুবই প্রয়োজন?।

জেলা আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরি সিদ্ধান্তকে আমি সাধুবাদ জানাই। তবে অপরিকল্পতি ভাবে মহাসড়কের জায়গায় বা একটি র্ধমীয় প্রতিষ্ঠানের সমস্যা সৃষ্টি করে ম্যুরাল তৈরি করার সিদ্ধান্ত কখনো সঠিক হবে না।

শরীফুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, মন্দিরের সাথে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরি হোক তা আমরা কখনো চাই না। ম্যুরাল তৈরির জন্য রাজপরগনা ও পৌর এলাকায় আরো অনেক জায়গা রয়েছে। এখানে ম্যুরাল তৈরি হলে আগামী দিনে সাম্প্রদায়িক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ব্যাটারি চালিত ভ্যান চালক বাদশা মিয়া বলেন, আমরা তাহেরপুর সড়কের মোড়ে দিনের বেশীর ভাগ সময় গাড়ি নিয়ে যাত্রীর অপেক্ষায় থাকি।

বিগত দিনে সড়ক ও জনপদের ওই স্থানটি প্রভাবশালীরা দখলে ছিল। কিছু দিন আগে পৌরসভা অবৈধ দোকান গুলো উচ্ছেদ করে মহাসড়কের পাশে পানি নিস্কাশনের ড্রেন খুঁড়েছেন। কিন্তু ড্রেনের কাজ শেষ না হতেই পৌর মেয়র বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরির নামে ওই স্থানটিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দখল নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে পৌর মেয়র রবিউল ইসলাম রবি বলেন, সড়কের সাথে একটি সাইনবোর্ড দেয়া প্রয়োজন তাই দিয়েছি। ম্যুরাল তৈরি কাজ যখন শুরু হবে তখন রীতিমত মাপঝোপ করে সড়ক ও জনপদের জায়গা ছেড়ে মন্দির ও জামাল লেদের কাছে তা করা হবে। আশা করা যায় এখানে ম্যুরাল তৈরি হলে কারো কোনো সমস্যা হবে না।


শর্টলিংকঃ