Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

পুঠিয়ায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিলুপ্ত প্রায় ১১ নদী


নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহীর পুঠিয়ায় কর্তৃপক্ষের নজরদারি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ছোট বড় ১১টি নদীর নাব্যতা হারিয়ে প্রায় বিলুপ্তি ঘটেছে। বেশীর ভাগ নদী গুলোতে পানি চলাচল না থাকায় তা ভরাট হয়ে গেছে। নদী ভরাটের কারণে বর্ষা মৌসুমে এলাকার অতিরিক্ত পানি নিস্কাশনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।

অপরদিকে খরা মৌসুমে চাষিদের সেচ কাজে পর্যাপ্ত পানি সংকটের মধ্যে থাকেন। ্এতে নদীর আশে পাশের এলাকার জমি গুলোতে আশানুরূপ ফসল উৎপাদন হচ্ছে না।উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এক সময়ের গভীর খরাস্রোত মুসাখাঁ নারোদ সুন্দর রায়চাঁদ পাবলই নিশানিশি আইচাঁদ সোকা হোজা সন্ধ্যা ও বারইন নদী কালের গর্ভে প্রায় বিলিন হয়ে গেছে। এক সময় পুঠিয়ার রাজপরগনা, নাটোর রাজপরগনাসহ পশ্চিম বাংলার কোলকাতা ও গাজিপুর রাজাদের রাজ্য পরিচালনা করতে তারা এই নদী পথ গুলো ব্যবহার করা করতেন।

আরোও পড়ুন:পুঠিয়ায় পুকুরের প্যালাসাইড গায়েব!

পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সওদাগররা বাণিজ্যর যাতায়াতে একমাত্র নদী পথই ভরসা ছিল। জনশ্রুতি আছে মুসাখাঁ নদীর উপজেলার পানানগর এলাকায় খড়স্রোতে ধনপতি চাঁদ সওদাগরের একটি মাল বোঝাই নৌকা ডুবে তা হারিয়ে যায়। অথচ বর্তমানে সে স্থানে পানিতো দুরের কথা নদীর চিহ্ন পর্যন্ত নেই। দীর্ঘ কয়েক যুগ পূর্বে নারোদনদীর তীরে পুঠিয়া উপজেলার কেন্দ্রীয় শ্মাশানঘাট ছিল। সেখানে পানি সল্পতার কারণে শ্মাশানঘাটের কার্যক্রম মুসাখাঁ নদীর তীরে পীরগাছা এলাকায় আনা হয়।

অথচ কালের বিবর্তনে মূসাখাঁ নদীও বর্তমানে প্রায় মরুভূমিতে রূপান্তিত হয়ে যাচ্ছে। বারইন, রায়চাঁদ, নিশানিশি, সোকাসহ বেশীর ভাগ নদীর প্রায় বিলুপ্তি ঘটেছে। ওই নদী গুলোর বেশীরভাগ জায়গা স্থানীয় ভূমি দস্যুরা ভরাট করে নিজেদের দখলে নিয়েছে। অনেকেই ওই নদীর ভরাটকৃত স্থান লিজ দিচ্ছে। আবার কেউ বসত বাড়ী ও ফসলী জমি হিসাবে ব্যবহার করছেন।

জানা গেছে, আশির দশকে রাজশাহীর পদ্মার নদীর শাখা বড়াল নদীর মুখে স্লুইজ গেইট নির্মাণ করা হয়। যার ফলে পুঠিয়ার মুসাখাঁসহ অনেক নদীর পানি চলাচলের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। বিগত দিনে বরেন্দ্র বহুমূখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ মূসাখাঁ নদী পূনঃখনন ও সংস্কারের নামে লাখ লাখ টাকা খরচা করলেও এর কোনো সুফল পাইনি স্থানীয় কৃষকরা।

জিউপাড়া এলাকার আঃ সাত্তার দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সরকারী লোকজনের অবহেলায় ও রক্ষনা-বেক্ষনের অভাবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা দিয়ে প্রবাহিত নদ নদী গুলো এখন প্রায় বিলুপ্তি হয়ে গেছে। বর্তমানে খড়া মৌসুমে কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য ওই নদী গুলোতে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায় না। আবার নদী গুলো ভরাট হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে পানি নিস্কাশনের বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে নদী গুলো পূণঃখনন ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা অতি জরুরী হয়ে দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্চু বলেন, নদী গুলোতে খড়া মৌসুমে পানি চলাচলের জন্য ইতিমধ্যে কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। নদী গুলোতে সব সময় পানি থাকলে আশে পাশের চাষিরা অল্প খরচে তা ব্যবহার করতে পাবেন। ইতিমধ্যে এলাকার দু’তিনটি নদীর স্থান দখল মুক্ত করে খনন কাজ করা হয়েছে। বাকি নদী গুলোর পানি প্রবাহের জন্য পর্যায় ক্রমে কাজ করা হবে।


Exit mobile version