পুঠিয়ায় লোকসানের আশঙ্কায় আম ও লিচু চাষীরা


আবু হাসাদ কামাল, পুঠিয়া :
রাজশাহীর পুঠিয়ায় চলতি বছর আম ও লিচু বাগান গুলোতে বিগত বছরের তুলনায় প্রচুর  ফল ধরেছে। তবে এ বছর দফায় দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়ায় চাষীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তার উপর ইটভাটা গুলোর কালো ধোঁয়ার করণে বেশীর ভাগ বাগান গুলোতে রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে বলেঅভিযোগ করছেন চাষীরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর নতুন ও পুরাতন মিলে প্রায় ৯শ’ হেক্টোর জমিতে আম বাগান রয়েছে। গত মৌসুমে এই এলাকায় আমের উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৫০ মে. টন। এবং উৎপাদন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মে. টন আম। এ বছর অনুকুল আবহাওয়া বিরাজ করলে প্রায় ৪ হাজার মে. টন আম উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অপরদিকে বাজার ভালো থাকায় প্রতিবছর লিচুর বাগান রোপণে আগ্রহ হচ্ছেন অনেক চাষীরা। এই এলাকায় নতুন পুরোনো মিলে প্রায় একশ’ হেক্টোর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে।

জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর থেকে এই অঞ্চলে বৈরি আবহাওয়ার বিরাজ করায় চাষীরা বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে লোকসানের মুখে পড়ছেন। যার কারণে তারা স্বল্প খরচে অধিক লাভের আশায় ফসলী জমি গুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির আম ও লিচুর গাছ রোপণ করছেন। গত বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় এ বছর আম ও লিচু বাগানে ব্যাপক মুকুল দেখা দেয়।

কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই দফায় দফায় মাত্রারিক্ত শিলা-বৃষ্টিতে বাগান মালিকরা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন। তার উপর বাগানগুলোতে পচন রোগের প্রভাব দেখা দিয়েছে। পচন রোধে চাষীরা বিভিন্ন প্রতিরোধক ব্যবহার করছেন। তবে এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেখা দেয়ায় বাগান মালিকরা চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

তবে  কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, আম-লিচুতে  সাধারণত  ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোয়া ও  ছিদ্রকারী মাছি পোকার করণে পচন হতে পারে। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া সঠিক ভাবে এর কারণ বলা যাচ্ছে না।

পৌরসভা এলাকার বাগান মালিক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এবার শুরুতেই শিলা-বৃষ্টির আঘাতে আম ও লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকায় আগাম আম ও লিচুর বাগান কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না ব্যবসায়ীরা।

চাষীরা অভিযোগ তুলে বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মোট ১৪টি ইটভাটা রয়েছে। আর ইটভাটার কারণে চাষীরা ভালো ফসল উৎপাদন করতে পারছে না। ভাটার কালো ধোয়ায় পুঠিয়া সদরসহ পশ্চিমভাগ-বাশবাড়িয়া এলাকা সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ওই এলাকায় বিভিন্ন ফল ও ফসলহানি ঘটছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম মনজুরে মাওলা জানান, বৈরি আবহাওয়ার কারণে মৌসুমের শুরুতে এই অঞ্চলে মাত্রারিক্ত শিলা-বৃষ্টি হয়েছে। এতে করে আম-লিচুসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে আরো শিলা-বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর বাগান গুলোতে রোগ-বালাই কমাতে সঠিক মাত্রায় স্প্রে করলে এই পোকা-মাকড় থেকে অনেক অংশে রেহাই পাওয়া সম্ভব।


শর্টলিংকঃ