পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভুয়া প্যাথলজী টেস্ট দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা


মাে: মাহফুজুর রহমান:

পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভুয়া প্যাথলজী টেস্ট দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য সেবা। এতে প্রতারিত হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। গত তিন মাস ধরে ভুয়া প্যাথলজী টেস্ট দিয়ে চিকিৎসা চলায় একজন রোগী প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পড়ে রাজশাহীর একটি প্রাইভেট প্যাথলজীতে পুণরায় তার টেস্ট করায় ঘটনাটি ধরা পড়ে।

ভুক্তভোগী রোগী পুঠিয়া পৌর সদরের কাঁঠালবাড়িয়া ওয়ার্ডের মৃত নূরুল ইসলামের স্ত্রী রিজিয়া বেগম। গত মে মাসের ১২ তারিখে তার হাত, পায়ের ফুলা ও ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা নিতে যান পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোরের জুনিয়র কনসালটেন্ড অর্থপেডিক ডাক্তার সাঈদ আহম্মেদের কাছে। ডাক্তার সাঈদ আহম্মেদ তাকে দেখে আরএ টেস্ট দেন। টেস্ট করার জন্য রিজিয়া বেগম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজী বিভাগে রক্ত দেন।

পুঠিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজী বিভাগ তার আরএ টেস্ট রিপোর্টে নেগেটিভ দেয়। টেস্ট রিপোর্ট পাওয়ার পর ডাক্তার সাঈদ আহম্মেদ এক মাসের চিকিৎসাপত্র দেন। এক মাসে ডাক্তার সাঈদ আহম্মেদের চিকিৎসায় তার কোন উন্নতি না হওয়ায় তিনি পুনরায় তার গেলে চিকিৎসক সাঈদ আহম্মেদ সেসময় তাকে রাজশাহীতে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। ডাক্তারের পরামর্শ মতাবেক রিজিয়া বেগম রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (অর্থ সার্জারী) ডাক্তার সফিকুল ইসামের প্রাইভেট চেম্বারে যান।

ডাক্তার সফিকুল ইসলাম পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টেস্ট রির্পোট দেখে আবার ১ মাসের চিকিৎসাপত্র দেন। ডাক্তার সফিকুল ইসলামের চিকিৎসাতেও তার কোন উন্নতি হয় না। এভাবে তার তিন মাস কেটে যায়। এতে তিনি বিছানাগত হয়ে পড়েন। পরে গত ১৮ আগোস্ট তার পরিবারের সদস্যরা তাকে পুণরায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসাপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার জহিরুল ইসলামের প্রাইভেট চেম্বার দি প্যাথলজীতে যান।

ডাক্তার জহিরুল ইসলাম তাকে বিভিন্ন টেস্টের মধ্যে আরএ টেস্ট দেন। সেখানে আরএ টেস্ট রিপোর্টে দেখা যায় ১২১.৪ আই ইউ/এম এল। বর্তমানে ডাক্তার জহিরুল ইসলামের চিকিৎসায় রিজিয়া বেগমের অনেকটা সুস্থ্য। অসুস্থ্য রিজিয়া বেগম বলেন, পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমার ভূল টেস্টের মাধ্যমে চিকিৎসা হওয়ায় আনেক কষ্ট পেয়েছি। এভাবে আমার চিকিৎসা চলতে থাকলে আমি হয়তো মারা যেতাম। আল্লাহ আমার হায়াত দিয়েছে তাই এ যাত্রায় বেঁচে গেছি।

এ রকম আর কারও যেন ভূল চিকিৎসা না হয়। এ বিষয়ে রাজশাহী মেজিকেল কালেজ হাসাপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এনামুল হক জানান, আরএ টেস্ট নেগেটিভ হওয়ার পর পজেটিভ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। রোগী রিজিয়া বেগমের আগে থেকে আরএ পজেটিভ ছিলো। আগের টেস্টটে ব্যবহৃত রিয়েজেন্ট অথবা তাদের মেশিনের মধ্যে হয়তো কোন ত্রুটি রয়েছে। তাছাড়া রিপোর্ট নেগিটিভ আসতো না।

পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজী বিভাগের টেকনিশিয়ান আসলাম আলী প্যাথলিজী টেস্টটি সঠিক বলে দাবি করেন। তার সাথে সুর মিলিয়ে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নাজমা নাহার একই কথা বলেন। টেস্ট রিপোর্ট ভূল হওয়ার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, দুই জায়গার টেস্ট দ্ইু রকম হতেই পারে।


শর্টলিংকঃ