পুঠিয়া-বানেশ্বর ইউপিতে ২০ বছর যাবত ভোট বন্ধ


আবু হাসাদ কামাল,পুঠিয়া:
রাজশাহীর পুঠিয়া-বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদে মামলার অজুহাতে প্রায় ২০ বছর থেকে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়ারম্যান বিএনপি ছেড়ে ক্ষমতাসীন দল আ’লীগে যোগদান করেছেন। যার কারণে মেয়াদ উর্ত্তীণ চেয়ারম্যান ও সাধারন সদস্যদের দিয়ে চলছে পরিষদের কার্যক্রম। বর্তমানে ওই ইউপি এলাকায় একাধিক জনপ্রতিনিধিদের কর্মকান্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।


জানাগেছে, সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন পরিষদে একসাথে নির্বাচন হয়। সে সময় স্থানীয় আ’লীগের সমর্থিত প্রার্থীকে পরাজিত করে বিএনপির প্রার্থী গাজি সুলতান নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১ সালে বিএনপির সাবেক সাংসদ অ্যাড. নাদিম মোস্তফা বানেশ্বর এলাকাকে পৌরসভা হিসাবে ঘোষনা করেন। ওই সময় পৌরসভা ঘোষনা বাতিল করতে চেয়ারম্যান গাজি সুলতান মহামান্য হাইকোটে একটি রীট আবেদন করেন।এরপর থেকে আইনী জটিলতায় থেমে যায় এই ইউপির নির্বাচন।

ইউপিতে প্রত্যায়নপত্র নিতে আসা সবুজ নামের একজন ভূক্তভোগি বলেন, সাধারণ মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় কাজ নিয়ে পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান ও সাধারণ সদস্যদের পান না। চেয়ারম্যান নানা অযুহাতে মাসে এক থেকে দু’দিন পরিষদে আসেন। সেই সাথে সাধারণ সদস্যদেরও একই অবস্থা। একটি স্বাক্ষর নিতে ভূক্তভোগিদের তাদের বাড়িতে যেতে হয়। অনেক সময় তারা নানা অযুহাতে আমাদের দিনের পর দিন হয়রানী করেন।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, দীর্ঘদিন এই পরিষদে ভোট না হওয়ায় জনপ্রতিনিধিরা তাদের ওপর অর্পিত দ্বায়িত্ব পালনে অবহেলা করছেন। এর ফলে ইউপি এলাকাজুড়ে ভূতুরে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেন না। নেই নিরাপদ পানি সরবরাহ ও পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা। বেশীর ভাগ রাস্তা-ঘাট এখনো জরার্জীন্ন। তারা বছর শেষে নামমাত্র কয়েকটি প্রকল্পের কাজ দেখিয়ে দ্বায়িত্ব শেষ করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সাধারণ সদস্য বলেন, এই ইউপিতে ভোট না হওয়ার পিছনে একমাত্র চেয়ারম্যান দ্বায়ি। তিনি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে এই মামলা পরিচালনা করছেন। এমনকি তিনি গত কয়েক বছর আগে বিএনপির পদ থেকে থেকে রাতারাতি আ’লীগে যোগদান করেছেন।

এ ব্যাপারে বানেশ্বর ইউপির মেয়াদ উর্ত্তীন্ন চেয়ারম্যান গাজি সুলতান বলেন, মাসের বেশীর ভাগ দিন উপজেলা-জেলার বিভিন্ন মিটিং সমাবেশে থাকতে হয়। যার কারণে আমি সব সময় পরিষদে থাকতে পারি না। তবে আমার অনুপস্থিতির কারণে পরিষদের কোনো কাজের সমস্য হয় না। মামলা ও দল বদল করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমি স্বাধিনতার পক্ষে বিশ্বাসী। বর্তমানে এই ইউপি পরিচলনা করার মত দ্বায়িত্ববান কেও নেই। যার কারণে আমার নিজের অর্থে মামলা চালিয়ে এলাকার জনগণের সেবা করছি।


শর্টলিংকঃ