পুনরায় ভারতবিরোধী অবস্থানে ফিরছে বিএনপি!


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি হঠাৎ করে ভারতবিরোধী অবস্থান পরিবর্তন করলেও নতুন করে আবার সে অবস্থানে ফিরে এসেছে দলটি। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতবিরোধী অবস্থান থেকে সরে গিয়েও কোনো ফল না পেয়ে আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেছে নেতারা।

জানা যায়, নির্বাচনের অন্তত ছয় মাস আগে থেকে প্রতিবেশী দেশ ভারতকে নিয়ে অবস্থান পাল্টানোর পরামর্শ আসে কয়েকটি উইং থেকে। দেশের প্রভাবশালী একাধিক প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে বিএনপির হাইকমান্ডকে আশ্বস্ত করে ভারতের বিষয়ে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্বিবেচনার। এই পরামর্শে যুক্ত হয় বিএনপির অভ্যন্তরীণ একটি অংশ, যারা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে কনভিন্স করতে সক্ষম হয়। ভারত নিয়ে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি বদলের দৃশ্যমান অগ্রগতি আসে গত বছরের জুনে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্মতি নিয়ে ভারত সফর করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির। ওই সফরে তারা বিবেকানন্দ ইন্সটিটিউট, বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন, ভারত সরকারের থিংক ট্যাংক আইডিএস, ওআরএফ, কংগ্রেসের রাজীব গান্ধী কনটেম্পোরারি ইন্সটিটিউটের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ না হওয়ায় সে অবস্থান ধরে রাখা অযৌক্তিক বিবেচনায় তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে দলটি।

বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ, দলের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির (এফএসি) গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সদস্য বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে দেশটির সঙ্গে কয়েকটি চুক্তির বিষয়ে বিএনপির মধ্যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব স্থায়ী কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন— এখন থেকে ভারতের দিকে সুদৃষ্টি রাখবে না দল। এক্ষেত্রে ভারতের প্রতি দৃশ্যমান কোনও দুর্বলতা না দেখানোর অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির হাইকমান্ড।

এ বিষয়ে বিএনপির রাজনীতির গভীর পর্যবেক্ষক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপির ঘুম ভাঙছে, আড়মোড়া দিচ্ছে। পুরোপুরি ঘুম ভাঙেনি। চুক্তি নিয়ে তারা এখনও পরিষ্কারভাবে ভারত প্রসঙ্গে কিছু বলেনি । বিএনপির রাজনৈতিক বড় ব্যর্থতা ভারতের তোষামোদ করা। বিএনপি মনে করে, ভারত-আমেরিকার সহায়তা ছাড়া ক্ষমতায় আসা যাবে না। যদিও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এ ভাবনা ফেলে দেয়ার মতো নয়। তবে নিজেদের সুনির্দিষ্ট অবস্থান অটুট রাখা উচিত। হয় এপার, নইলে ওপারে। নির্বাচনকালীন সময়ে একদিকে পা আবার নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আরেকদিকে- বিষয়টি ভালো দেখায় না। ফলে ভারতকে নিয়ে বিএনপির আরও একটু ভাবা উচিত।


শর্টলিংকঃ