পুুঠিয়ায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে পুকুর খনন


পুঠিয়া প্রতিনিধি:

রাজশাহীর পুঠিয়ায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন স্থানে চলছে পুকুর খননের কাজ। অভিযোগ রয়েছে এক শ্রেণীর মৎস্য ব্যবসায়ীরা স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের মদদে রাতা-রাতি পুকুর খনন কাজ করছে।

পুুঠিয়ায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে পুকুর খনন

বিলের পানি প্রবাহের স্থান বন্ধ করে বড় দিঘি কাটাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজনদের মাঝে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে। অপরদিকে মাত্রাতিরিক্ত পুকুর খননের ফলে এই অঞ্চলে বিভিন্ন ফসলি জমি অতিদ্রুত কমে যাচ্ছে।জানা গেছে, উপজেলার ভালুকগাছি এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের পূর্বপাশে একশ’বিঘা জমিতে পুুকুর খনন শুরু হয়েছে। এছাড়া ধোকড়াকুল, এসআরজি ও ফুলবাড়ি এলাকায় পুরোদমে খনন কাজ চলছে। অপরদিকে শিলমাড়িয়া ও জিউপাড়া এলাকায় চারটি স্থানে পুকুর খনন চলছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর জনস্বার্থে মহামান্য হাইকোর্টের ২৪৭৬/২০১৯ নম্বরে একটি রিট আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত ১০/০৩/২০১৯ ইং কৃষি জমিতে পুকুর খনন না করতে আদেশ দেন। পাশাপাশি কোথাও পুকুর খনন কাজ চললে উপজেলা প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়। পুকুর খনন বন্ধে উপজেলা প্রশাসন গত বছর ২৮ মার্চ স্বারক নং-০৫.৪৩.৮১৮২.০০০.১৬.০১৫.১৮-৩৬৫(১০) একটি গণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।

এলাকাবাসীদের অভিযোগ, মৎস্য ব্যবসায়ীরা স্থানীয় কৃষকদের বেশী টাকার বাৎসরিক ইজারার লোভ দেখায়ে দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তি করেন। পরে ওই ফসলী জমিগুলোতে পুকুর খননের পূর্বে পুলিশ-প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের সাথে বিশেষ চুক্তি করে। এরপর একাধিক স্কেভেটারের মাধ্যমে পুকুর খনন কাজ শুরু হয়। তারা আরো বলেছেন, মৎস্য ব্যবসায়ীরা বিলের পানি প্রবাহের স্থান বন্ধ করে বড় দিঘি কাটছে। এলাকায় যত্রতত্র ভাবে পুকুর খনন করায় কৃষকরা বছরের বেশীর ভাগ সময় বিলে পানি বন্ধি থেকে। এতে করে কৃষকদের প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকার ফসলহানী ঘটছে।

ভালুকগাছি ইউপি চেয়ারম্যান তাকবির হোসেন বলেন, নিয়ম অনুসারে ইউপি চেয়ারম্যানগণ উপজেলা জলমহল কমিটির সদস্য। কিন্তু এখানে যে পুকুর খনন কাজ শুরু হয়েছে সেটার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমার মনে হয় এলাকার কয়েকজন স্বার্থান্বেষী ব্যাক্তি ক্ষমতার দাপটে উপর মহলের সাথে বিশেষ যোগাযোগ করেই এতো বড় পুকুর খনন করছে। এই পুকুর খনন করা হলে বর্ষা মৌসুমে এলাকার প্রায় দেড় হাজার বিঘা ফসলি জমি জলাবদ্ধতায় থাকবে। পুকুর খনন বন্ধের বিষয়টি নিয়ে এলাকার লোকজন গণস্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ওলিউজ্জামান বলেন, ভালুকগাছি এলাকায় পুকুর খনন বন্ধে এলাকার লোকজন একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সে মোতাবেক আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাছাড়া উপজেলার যেখানে পুকুর খননের কাজ হবে সেখানেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


শর্টলিংকঃ