পেনশনের টাতা নিতে বৃদ্ধা মাকে খাট ধরে টেনে ব্যাংকে হাজির মেয়ে


ইউএনভি ডেস্ক:
পেনশনের টাকা তুলতে ১২০ বছর বয়সী মাকে খাটিয়া সমেত টেনে ব্যাংকে হাজির করলেন তার ৬০ বছর বয়সী মেয়ে। এমন মর্মস্পর্শী এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ওড়িশার নুয়াপাড়া জেলার খাড়িয়ার ব্লকের অধীন বরগাঁও গ্রামের। স্যোশাল মিডিয়ার কারণে ইতিমধ্যে সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। আর ঘটনাটি সামনে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

পেনশনের টাতা নিতে বৃদ্ধা মাকে খাট ধরে টেনে ব্যাংকে হাজির মেয়ে

গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গত ১০ জুন বরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা গুঞ্জা দেই সিকা তার শতবর্ষ বয়সী অতিবৃদ্ধ শয্যাশায়ী মা লাভে বাঘেলকে খাটিয়ায় শুইয়ে গ্রামের কাঁচা রাস্তা ধরে সেই খাট টানতে টানতে স্থানীয় উৎকল গ্রামীণ ব্যাংকে যান। সেখানে মাসিক পেনশন বাবদ ১৫০০ রুপি তুলতে যান মা ও মেয়ে।

অভিযোগ, ৯ জুন সকালে ব্যাংকে গেলে গুঞ্জা দেইকে উৎকল ব্যাংকের ম্যানেজার অজিত প্রধান জানান, অ্যাকাউন্ট যাচাইয়ের জন্য মালিককে স্ব শরীরে ব্যাংকে হাজির হতে হবে, না হলে পেনশনের অর্থ দেওয়া যাবে না। ফলে নিরুপায় হয়েই পরদিন শয্যাশায়ী মাকে খাটিয়াতে শুইয়েই সেই খাটিয়া টানতে টানতে ৪০০ মিটার দূরে ব্যাংকে হাজির হন মেয়ে। কারণ বৃদ্ধা মাকে ব্যাংকে নিয়ে যাওয়ার আর কোন পথ খোলা ছিল না গুঞ্জা দেইয়ের। এরপর ম্যানেজার তাদের হাতে পেনশনের অর্থ দেন।
করোনা সংকট মোকাবিলায় গত মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গরিব কল্যাণ প্রকল্পে দরিদ্র শ্রেণির নারীদের জনধন অ্যকাউন্টে এপ্রিল মাস থেকে মাসিক ৫০০ রুপি সহায্য দেওয়া হবে বলে ঘোষনা করেন। গত তিন মাসের গচ্ছিত সেই পেনশনের রুপিই তুলতে যান গুঞ্জা দেই।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও পোস্ট করার পরই ব্যাংক কর্তৃপক্ষের অমানবিক আচরণের অভিযোগে বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে এসব ক্ষেত্রে ব্যাংকিং পরিষেবা প্রদানের জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কেন একজন ফ্লিড কর্মকর্তা নিয়োগ করে না। যদিও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের তরফে সাফাই দিয়ে জানানো হয়েছে ওই অতিবৃদ্ধার বয়স সম্পর্কে তাদের কাছে ধারনা ছিল না।

নুয়াপাড়ার জেলাশাসক মধুস্মিতা শাহু জানান ব্যাংকের নথি যাচাইয়ের জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গুঞ্জা দেই’র বাড়িতে যাওয়ার কথা বললেও তার অপেক্ষা না করে তিনিই তার অতিবৃদ্ধা মাকে নিয়ে ব্যাংকে হাজির হন।


শর্টলিংকঃ