Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

প্রভাবশালীদের দখলের মুখে বিলসুতি


রাজেকুল ইসলাম, রাণীনগর :

প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলের কবলে পড়তে যাচ্ছে নওগাঁর আত্রাইয়ের উন্মুক্ত জলাশয় ‘বিলসুতি’। ইতিমধ্যে জলাশয়ে অবৈধ ভাবে স্থায়ী ভাবে বাঁধ নির্মাণও শুরু করেছে তারা। তবে  প্রশাসনের বাধায় তা আপাতত বন্ধ হলেও আবারো তৎপর হয়ে উঠেছে অবৈধ দখলকারীরা।

জানা গেছে, আত্রাই উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়ন ও রাজশাহী বাঘমারা উপজেলার কিছু অংশ নিয়ে ঐতিহ্যবাহী এই উন্মুক্ত জলাশয় ‘বিলসুতি’র অবস্থান। বিলসুতির আয়তন প্রায় ১০০ বিঘা । মাছের অভয়অরন্য ,মৎস্য আহরোন,কৃষি জমিতে সেচ ব্যবস্থা ও পানির গতি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে ৭ বছর পূর্বে এই উন্মুক্ত জলাশয়ের অংশে বরেন্দ্র বহুমূর্খী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) খাল খননও করে।

এই খাল খনননের ফলে বলসুতি’র পানি প্রবাহের নতুন গতিপথ সৃষ্টি হয় এবং গজমতখালি খাল দিয়ে শুটকিগাছা হয়ে আত্রাই নদীর মূল অংশের সাথে গতিপথের মিলনমেলার সৃষ্টি হয়েছে। জলাশয়ে আষাঢ় থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত পানি থাকে। বিলের পানি দিয়ে ওই ইউনিয়নের বড় শিমলা, চকশিমলাসহ কয়েকটি গ্রামের কৃষক প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমির বোরো ও আউশের আবাদ করে থাকেন। এছাড়া ওই এলাকার প্রায় ৫শ মৎসীজীবী এ বিলে মাছ শিকার করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করেন।

অভিযোগ রয়েছে, গত দুই বছর থেকে ওই জলাশয়ে স্থানীয় বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করছেন। বেশকিছু দিন থেকে চক্রটি নতুন ভাবে এই বিল দখলের পাঁয়তারা শুরু করে।এক পর্যায়ে উন্মুক্ত জলাশয়ের অংশে বরেন্দ্র বহুমূর্খী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের খননকৃত খালের মুখ বন্ধ করে ১৫/২০ দিন ধরে দুইটি স্ক্যাবেটর দিয়ে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের কাজ করছেন।

ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, জমির মাটি কেটে নিয়ে প্রভাবশালীরা বাঁধ নির্মাণ করছেন। এই বাঁধ নির্মাণ করা হলে বর্ষা মৌসুমে বিল থেকে পানি নামতে পারবে না। এতে করে সামান্য বৃষ্টিতে বন্যার সৃষ্টিসহ ফসল ডুবে ক্ষতির আশংকাসহ মৎসজীবীরা বেকার হয়ে পড়বে।

বড়শিমলা গ্রামের কৃষক মোতাহার হোসেন বলেন, এই মাঠে আমার ৭ বিঘা ফসলি জমি আছে। ওই জমিতে আবাদ করে আমার সারা বছরের ভরন পোষন হয়ে থাকে। একটি মহল প্রজেক্টের নাম করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য জোরপূর্বক জমি দখল করে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ করছেন। যে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে পানি বেরিয়ে যাওয়ার কোন উপায় না থাকায় বর্ষা মৌসুমে আমাদের ফসল ডুবে যাবে। আবার যে জমি থেকে মাটি কেটে বাঁধ তৈরী করা হচ্ছে সেই জমিও নষ্ট হচ্ছে।

হাটকালুপাড়া গ্রামের মৎসীজীবী বয়তুল্লাহ ও আব্দুল করিম বলেন, আমরা দীর্ঘ বছর এই জলাশয় থেকে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। গত তিন বছর জলাশয় থেকে কোন মাছ শিকার করা তো দূরের কথা প্রভাবশালীরা আমাদের জলাশয়ে নামতে পর্যন্ত দেয় না।

আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো: ছানাউল ইসলাম বলেন, বিলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন স্ক্যাবেটর মেশিন জব্দ করেছে। বাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধে আইনগত  ব্যবস্থা নেয়া হবে।


Exit mobile version