ফের উত্তপ্ত হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়


ইউএনভি ডেস্ক নিউজ:

শিক্ষক আন্দোলনের ফলে প্রায় আড়াই মাস ধরে শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থার কারণে শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। ফলে আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠে হাবিপ্রবি।

হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক।

ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর দাবিতে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) প্রশাসনিক ভবন এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) অনুষদ রোববার প্রায় দিনভর তালাবদ্ধ করে রেখেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

এদিকে রোববার থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর আশ্বাস দেয়া হলেও ক্লাস ও পরীক্ষা চালু না হওয়ায় হাবিপ্রবির বিজ্ঞান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসসি) এবং ফিশারিজ অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

দুপুর দেড়টায় তারা প্রশাসনিক ভবন এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের মূলগেটে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ।এতে প্রশাসনিক ভবনে অবস্থানরত কর্মকর্তারা এবং সিএসই অনুষদের শিক্ষকরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে তারা সন্ধ্যায় ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থা নিরসনের দাবিতে ভাইস চ্যান্সেলরের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শিক্ষকরা নিজ স্বার্থ হাসিলে নিজ নিজ অবস্থানে অনঢ় থাকার কারণে তাদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছেন। বাড়ি থেকে বাবা-মা লেখাপড়ার জন্য প্রতিমাসে কষ্টার্জিত টাকা পাঠালেও শিক্ষকদের আন্দোলনের ফলে তাদের লেখাপড়া হচ্ছে না। বসে বসে তারা (শিক্ষার্থীরা) সময় নষ্ট করছেন।

তাদের বন্ধুরা অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে চাকরির জন্য আবেদন করলেও ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় তারা এখনো অনার্স পাস করতে পারেননি।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর সংকট নিরসন করে রোববার থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর আশ্বাস দিলেও কোনো ক্লাস ও পরীক্ষা চালু হয়নি। এতে তাদের শিক্ষাজীবনে অনিশ্চয়তা কাটছে না। তাই বাধ্য হয়েই তাদের আন্দোলনে যেতে হচ্ছে।

হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. সফিউল আলম বলেন, রোববার থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সংকট নিরসন না হওয়ায় ক্লাস ও পরীক্ষা চালু করা সম্ভব হয়নি। তিনি জানান, শিক্ষকদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। আলোচনার মাধ্যমেই সংকট নিরসন হলে যথারীতি ক্লাস ও পরীক্ষা চালু করা সম্ভব হবে।

এদিকে রোববার বিকালে ভাইস চ্যান্সেলরের বাসভবনে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের নেতৃবৃন্দরা সংকট নিরসনে আলোচনার জন্য বসে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত ১৪ নভেম্বর থেকে বেতন বৈষম্য দূরীকরণ, সহকারী অধ্যাপকদের লাঞ্ছিত ও নারী শিক্ষিকাদের শ্লীলতাহানিকারীদের বিচার, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, রেজিস্ট্রার ও ছাত্র উপদেষ্টার বহিষ্কার ও দুই সহকারী অধ্যাপকের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছেন নতুন পদোন্নতিপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপকরা।

তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামও। এতে করে গত আড়াই মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আন্দোলনে থাকায় হাবিপ্রবির বিজ্ঞান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসসি) এবং ফিসারিজ অনুষদের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা।


শর্টলিংকঃ