ফের হামলার হুমকি, গোয়েন্দাদের চিন্তার বিষয় ‘উলফ প্যাক’


রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে জঙ্গিদের নতুন করে সংগঠিত হওয়ার বিষয়টি চিন্তায় ফেলে দিয়েছে গোয়েন্দাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের অনুসারী নব্য জেএমবির একটি ‘উলফ প্যাক’-এর পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতারের পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ‘সেলফ র‌্যাডিক্যালাইজড’ হয়ে ‘উলফ প্যাক’ এর মাধ্যমে জঙ্গিরা সংগঠিত হতে থাকলে তা ঠেকানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে।

এরইমধ্যে শুক্রবার (৯ আগস্ট) মধ্যরাতে জঙ্গিদের প্রপাগান্ডায় ব্যবহৃত টেলিগ্রাম চ্যানেল আত-তামকীনে নতুন একটি ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সরকারি অফিস-আদালত,নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যালয়,হিন্দু-বৌদ্ধসহ জঙ্গিদের ভাষায় কাফির-মুশরিকদের ওপর হামলা করা হবে বলে ওই ভিডিওতে হুমকি দেওয়া হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিশেষ করে জঙ্গি প্রতিরোধে বিশেষায়িত সংস্থা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট- সিটিটিসির কর্মকর্তারা বলছেন, ‘উলফ প্যাক’ কৌশলে জঙ্গিদের সংগঠিত হওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশে নতুন। এর সদস্যরা নিজেরা নিজেরা র‌্যাডিক্যালাইজড হয়ে হামলা চালানোর চেষ্টা করছে। এরকম একাধিক ‘উলফ প্যাক’ রয়েছে বলেও ধারণা করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এছাড়া, নতুন করে হুমকি দেওয়া ভিডিও প্রকাশের বিষয়টিও তারা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছেন।

সিটিটিসির এক কর্মকর্তা বলছেন, নতুন ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে জঙ্গিরা তাদের অস্তিত্ব জানান দিতে চাইছে। একইসঙ্গে এ বছর চার জায়গায় তাদের বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টাও গোয়েন্দাদের চিন্তার বিষয়। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হওয়া ‘উলফ প্যাক’- এর জঙ্গি সদস্যরা অন্তত দুটি বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ করছেন সিটিটিসি কর্মকর্তারা।

একদিন আগেই গত শুক্রবার সিটিটিসির প্রধান ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, ‘হলি আর্টিজানের ঘটনার পর জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক আমরা ভেঙে দিতে পেরেছি। কিন্তু এরা যেহেতু বিচ্ছিন্ন ও মতাদর্শিকভাবে এক্সিস্ট করে, সে হিসেবেই তারা বিচ্ছিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই চেষ্টা বা কার্যক্রম চালানোর প্রক্রিয়া হিসেবেই এরকম আরও কিছু ছোট ছোট ‘স্লিপার সেল’ বা ‘উলফ প্যাক’ তৈরি হয়েছে। অভিযান চালিয়ে তাদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তাদের (জঙ্গিদের) যে আইডোলজি কিংবা ডগমা বা ডক্ট্রিন, যেটা এখনও এক্সিস্ট করে, ফলে বিচ্ছিন্নভাবে সাইবার স্পেসে যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এতে ঝুঁকিও আছে। কিন্তু ঝুঁকির মাত্রাটা ছোটখাটো। যতক্ষণ পর্যন্ত একজন এক্সিস্ট করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ঝুঁকি থাকবে।’


শর্টলিংকঃ