ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি নির্ভরযোগ্য নয়!


ইউএনভি ডেস্ক:

ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি দিন দিন উন্নততর হচ্ছে। এই ধরনের অ্যালগরিদমকে কাজে লাগিয়ে অনেক কোম্পানি মানুষের আবেগ পর্যালোচনা করে নিচ্ছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।

ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি নির্ভরযোগ্য নয়!

তবে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক লিসা ফিল্ডম্যান ব্যারেট মনে করেন, বর্তমানে যে প্রযুক্তি উপর ভিত্তি করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অ্যালগরিদমগুলো মানুষের ইমোশন রিকগনিশনের কাজ করছে তা খুবই পুরনো ও মেয়াদউত্তীর্ণ পদ্ধতি।তার মতে, বিশ্বব্যাপি একই রকম ঘটনায় মানুষের অভিব্যাক্তি একই রকম নয়।

যেমন বৈশ্বিকভাবে যে অভিব্যাক্তিকে ভয়ের এক্সপ্রেশন হিসেবে অ্যালগরিদমগুলো চেনে, মালয়েশিয়ার মানুষ সাধারনত হুমকি পেলে ও রাগ হলে সেরকম অভিব্যাক্তি দিয়ে থাকে।এমন আরও অনেক উদাহরণ আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, পশ্চিমা সংস্কৃতিতে মানুষ রেগে গেলে কেবল ৩০ শতাংশ সময়ে রাগের অভিব্যাক্তি প্রকাশ করে।

বাকী ৭০ শতাংশ সময়ে তারা সাধারণত মুখ ঘুরিয়ে নেয়।তাই সুখ, দুঃখ, রাগ, বিস্ময়, বিরক্তি, শান্তি ও বিহ্বলতার যে বৈশ্বিক অভিব্যাক্তি আছে বলে মনে করা হচ্ছে সেই অনুমানটি ভুল। এমন অনুমানের উপর ভিত্তি করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অ্যালগরিদমকে ট্রেইন করলে তা নির্ভরযোগ্য ফলাফল দিতে পারবে না বলে মনে করেন তিনি।ফেসিয়াল রিকগনিশনের বর্তমান পদ্ধতিটির উপর প্রযুক্তিপাড়ার মনোযোগ বাড়ে ১৯৬০ সালে।

মার্কিন মনোবিদ পল ইকমান তখন পাপুয়া নিউ গিনিতে একটি গবেষণার চালান। গবেষণায় তিনি দেখান যে একটি একই ধরনের ঘটনায় ভিন্ন ভিন্ন মানুষের অভিব্যাক্তি একই রকম হয়ে থাকে।সমস্যার বিষয় হচ্ছে ওই গবেষণায় যে গোষ্ঠিকে ব্যবহার করা হয়েছিলো সেটি ছিলো একটি ‘আইসোলেটেড ট্রাইব’।

তাই সঠিক র‍্যান্ডমাইজেশান হয়নি বলেই গবেষকদের ধারণা।এদিকে, বড় বড় কোম্পানিগুলো এই ধরনের ফেসিয়াল রিকগনিশনের অ্যালগরিদমকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সিস্টেম ডেভেলপ করছে যা নিয়োগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কাজে লাগছে।গত বছরের অক্টোবরে ইউনিলিভার এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর বেশ সাড়া পড়ে যায়।

তাদের দাবি, একটি ফেসিয়াল রিকগনিশন অ্যালগরিদমকে কাজে লাগিয়ে তারা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এক লাখ কর্মঘণ্টা সাশ্রয় করেছে।এই প্রবণতা খুবই আশংকাজনক বলে মনে করেন লিসা। তার মতে, এসব প্রযুক্তি এখনও এতোটা নির্ভরযোগ্য হয়নি যে মানুষের জীবনের এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে নিতে পারবে।


শর্টলিংকঃ