ফ্রান্সে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের হামলা, নীরব ইউরোপীয় ইউনিয়ন


ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর পেনশন ব্যবস্থা সংস্কার পরিকল্পনার প্রতিবাদে শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) ফ্রান্সজুড়ে বিক্ষোভ-ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) আন্দোলনকারীদের ওপর ধর্মঘটের প্রথম দিনে পুলিশ অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে আন্দোলনকারীদের ওপর অতিরিক্তি বল প্রয়োগ করেছে ফ্রান্সের পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

যদিও এ বিষয়ে নীরব ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কিন্তু এ সংস্থাটিই সাধারণত বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে নিজেদের উদ্বেগ জানানোর পাশাপাশি সঙ্কট সমাধানে দ্রুত এগিয়ে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু নাকের ডগায় ফ্রান্সে পুলিশের বল প্রয়োগের বিষয়ে নীরব থাকা, সংস্থাটিকে ফেলে দিয়েছে সমালোচনার মুখে।

শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদুলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইইউ ফ্রান্স পুলিশের এ অতিরিক্ত বল প্রয়োগের নিন্দা জানাতে অনিচ্ছুক। এটা সম্পূর্ণ পক্ষপাতমূলক আচরণ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্রান্সে পেনশন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রতিবাদে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দ্বিতীয় দিনের মতো ধর্মঘট পালিত হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (০৫ ডিসেম্বর) সেখানে পুলিশ ধর্মঘটে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে। এদিন কাঁদানে গ্যাসের শেলের আঘাতে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আহত হন সাংবাদিক মোস্তফা ইয়ালসিন।

এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশনের মুখপাত্র এরিক মামের বলেন, কমিশন মানুষের আন্দোলনের অধিকার এবং এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের অধিকারের বিষয়ে সম্মান করে। একইসঙ্গে পুলিশের অবশ্যই দায়িত্ব রয়েছে যেন, শান্তিপূর্ণভাবে মানুষ আন্দোলন করতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়টি নিয়ে আমাদের মন্তব্য করার কিছু নেই।

যখন বিশ্বের অন্য কোথাও আন্দোলনে বল প্রয়োগের ঘটনা ঘটে তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজেদের উদ্বেগের কথা জানায় কিন্তু ফ্রান্সের ক্ষেত্রে এটি কেন দেখা যাচ্ছে না জানতে চাইলে মামের বলেন, কমিশনের সদস্য রাষ্ট্রে সংগঠিত এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতেক্যের নিজস্ব প্রক্রিয়া রয়েছে।

ম্যাক্রোঁ পরিকল্পিত পেনশন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রতিবাদে ফ্রান্সে সাম্প্রতিক সময়ের ইতিহাসে অনুষ্ঠিত অন্যতম বৃহৎ ধর্মঘট এটি। ৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটের প্রথম দিনে ৭ কোটি জনসংখ্যার দেশটির প্রায় ৮ লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নেন।

ফ্রান্সে বর্তমানে প্রায় ৪২ ধরনের পেনশন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এগুলো বিলোপ করে সংস্কারের মাধ্যমে পেনশনকে একটি সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।


শর্টলিংকঃ