- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

বজ্রপাত ঠেকাতে ব্যক্তি উদ্যোগে তালগাছ রোপণ


ইউএনভি ডেস্ক:

বজ্রপাতের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে এখন সবাই চিন্তিত। আর এ কারণেই এখন বিলুপ্তির পথে হারিয়ে যাওয়া তালগাছের কদর বাড়ছে। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছে তালগাছ বজ্র নিরোধক হিসেবে কাজ করে। সরকারও ইতোমধ্যে প্রায় ১০ লাখ তালগাছের চারা রোপণ করেছে।

বজ্রপাত ঠেকাতে ব্যক্তি উদ্যোগে তালগাছ রোপণ।

এদিকে বজ্র নিরোধক হিসেবে তালগাছের গুরুত্ব অনুধাবন করে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রায় ৩ শতাধিক তালগাছের চারা রোপণ করেছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব মৌকুড়ী গ্রামের মৃত আব্দুল নওয়াব আলীর ছেলে মো. তাজুল ইসলাম পাটোয়ারি (৮২)।

গাদারগাড়া মাঠের হালটের রাস্তা, বালিয়াকান্দি-মধুখালী সড়কের পাশে এবং আমতলা মসজিদ থেকে পশ্চিমের রাস্তার দু’পাশে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে বৃদ্ধ তাজুলের হাতে লাগানো তালগাছের চারাগুলো।

জানা গেছে, বর্তমানে বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছেন তাজুল। ঠিকমতো চলতে পারেন না। তবে কষ্ট হলেও নিজের লাগানো তালগাছের চারাগুলোকে নিয়মিত ভাবে পরিচর্যা করছেন। হাত খরচের জন্য সন্তানদের কাছ থেকে যে টাকা পান তার পুরোটাই তালগাছের চারা রোপণের কাজে ব্যয় করেন। তার এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ।

বৃদ্ধ তাজুল ইসলাম পাটোয়ারি জানান, তার নিজস্ব কোনো জায়গা-জমি নেই। তিনি প্রায় ৫-৭ বছর ধরে অন্যের জমির আইলের উপর তালগাছের চারা রোপণ করছেন। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩ শতাধিক তালগাছের চারা রোপণ করেছেন। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা গাছগুলোর যত্ন নেন। নিজের সন্তানদের যেমন স্নেহ করেন, ঠিক তেমনি তালগাছের চারাগুলোকেও আদর করেন তিনি।

বজ্রপাত ঠেকাতে ব্যক্তি উদ্যোগে তালগাছ রোপণ।

তবে একটু আক্ষেপ করে তাজুল ইসলাম জানান, মানুষ এখনো অনেক অসচেতন। বজ্রপাতে যেহারে মানুষ মারা যাচ্ছে তাতে তাদের নিজেদেরই তালগাছের চারা রোপণ করা উচিত। অথচ তারাতো রোপণ করছেই না উল্টো তার গাছগুলো গরু-ছাগল দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে। এতে অনেক চারা নষ্ট হয়ে গেছে। যেখানে নষ্ট হয়ে গেছে বা মারা গেছে সেখানে নতুন করে আবার রোপণ করেছেন তিনি।

বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি মো. জাকির হোসেন জানান, তাজুল ইসলাম এ পর্যন্ত নিজ উদ্যোগে অন্যের জমির আইলের উপর প্রায় ৩ শতাধিক তাল গাছের চারা রোপণ করেছেন। বিষয়টি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত এবং খুবই ইতিবাচক।

‘যেহেতু বর্তমান সময়ে বজ্রপাতে মানুষ ও গবাদি পশুর ব্যাপক প্রাণহানি ঘটছে, এ পরিস্থিতিতে মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য তালগাছের চারা রোপণের কোনো বিকল্প নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত তাকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করা। বিশেষ করে কৃষি অধিদপ্তরের দৃষ্টি দেওয়া উচিত।’

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘তাজুলের ব্যক্তি উদ্যোগে তালগাছের চারা রোপণকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমার দপ্তর থেকে বৃদ্ধ তাজুল ইসলামকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।’