বন্যায় বিপর্যস্ত লাইন নিয়ে বিপাকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে


বিশেষ প্রতিবেদক :

উত্তরাঞ্চলে প্রবল বন্যায় বিপরযস্ত হয়ে পড়েছে রেলযোগাযোগ। বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি রুটে ট্রেন চলাচলও। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোর বন্যাতে এরকম ভাঙনের কবলে পড়ে নি রেললাইন। তবে আসছে কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে দ্রুত রেল লাইন পুনঃস্থাপন করতে চায় তারা। কিন্তু তা সম্ভব হবে কি না–তা নিয়ে সংশয় কাটছে না।

গাইবান্ধায় বন্যার কবলে রেললাইন

বন্যায় রেলওয়ের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এতে দেখা গেছে ৭টি রুট বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রেলওয়ের বেনারপাড়া-বাদিয়াখালী (৩৬৮/০-৩৭৪/৪) সেকশনে রেললাইনের ওপর দিয়ে এখনও পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় বিভাগীয়ভাবে ছোট ছোট স্পটে মেরামত কাজ শুরু করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, পুরোপুরি কাজ শেষ করতে আগামী ২৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় লাগবে। আর কোরবানির ঈদের ছুটি শুরু হতে পারে আগামী ১০ বা ১১ আগস্ট। ফলে এই রুটে ঈদযাত্রীদের ট্রেনযাত্রায় বিঘ্ন ঘটবেই। এ রুটে ঈদের আগে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা কম।

একইভাবে বালিয়াখালী-গাইবান্ধা রুটে রেললাইনের ওপর দিয়ে তীব্রভাবে স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত রুটগুলোর মধ্যে এই রুটটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ৫টি স্থানে রেললাইনের নিচের মাটি, পাথর ও বালি সরে গিয়ে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ রুটের ৩৭৪/৪-৩৭৪/৬ সেকশনে রেলওয়ে লাইনের নিচ থেকে মাটি ও পাথর সরে গিয়ে ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের ১৬ ফুট গভীর একটি গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। একই রুটের ৩৭৫/০-২ সেকশনে ১৫ ফুট দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট ১০ ফুট গভীরতায় দুটি গর্ত সৃষ্টি হয়। এছাড়া ৩৭৫/২-৪ ও ৩৭৬/০-৩৭৬/৪ সেকশনে ৫০০ ও ৬০০ ফুট দৈর্ঘ্যের দুটি ১৮ ফুট গভীরতায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

কুড়িগ্রামের চিলমারিতে রেললাইনের ওপর আশ্রয় নিয়েছে বানভাসি মানুষ

এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক ইঞ্জিনিয়ার খোন্দকার শহীদুল ইসলাম ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে জানান,  গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের বিভিন্ন স্থানে রেললাইন বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও রেল সড়ক ভেঙে স্রোতের তোড়ে ভেসে গেছে। আবার কোথাও কোথাও মাটি ও পাথরসহ রেলপথ দেবে গেছে। এ অবস্থায়  কয়েকটি স্টেশনের সঙ্গে ঢাকার এখনও সরাসরি রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন স্থানেও ট্রেন আটকা পড়েছে।

তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে ঈদের ছুটির আগেই রেললাইনগুলো সচল করার। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত লাইন পুনঃস্থাপন করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি।


শর্টলিংকঃ