Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

বরেন্দ্রজুড়ে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব


নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাঙালির ঐতিহ্যবাহী শস্য উৎসব ‘নবান্ন’। মূলত: অগ্রহায়ণে কৃষের ঘরে ওঠে নতুন ধান। নতুন ধান বা নতুন অন্ন থেকেই এসেছে ‘নবান্ন’।প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অগ্রহায়ণের প্রথম দিন বিশেষ এই লৌকিক প্রথা পালন হয়ে আসছে বরেন্দ্রজুড়ে। কোথাও কোথাও মাঘ মাসেও নবান্ন উদযাপনের প্রথা রয়েছে।


ঋতুবৈচিত্র্যে হেমন্ত আসে শীতের আগেই। কার্তিক আর অগ্রহায়ণ মাস নিয়ে হেমন্ত ঋতু। আর নবান্ন হচ্ছে হেমন্তের প্রাণ।অগ্রহায়ণ এলেই কৃষকের মাঠজুড়ে ধানকাটার ধুম পড়ে যায়। অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটান এ সময়ে কৃষাণ-কৃষাণীরা। চারদিকে নতুন ফসল ঘরে তোলার আনন্দ।

যান্ত্রিক এই সময়ে এসেও ভাটা পড়েনি উৎসবে। অগ্রাহয়ণের প্রথম দিন সোমবার (১৬ নভেম্বর) বরেন্দ্র অঞ্চলজুড়ে একযোগে শুরু হয়েছে ধান কাটা উৎসব।বরাবরের মত এবারো নবান্ন অনুষ্ঠান আয়োজনও ছিল রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুরে। স্থানীয় কৃষক মনিরুজ্জামান এ আয়োজনের উদ্যেক্তা।

সাওতাল রমনী ও পুরুষদের ধান কাটার প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে এ উৎসবের আনুষ্ঠিকতা শুরু হয়।বিকেলে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমান নবান্নে ধান কাটা উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি নিজেও কাস্তে হাতে মাঠে নামেন ধান কাটতে।

স্থানীয় সুধীজনদের নিয়ে সেখানে আয়োজন করা হয় নানা নৃত্য, সঙ্গীতসহ নানা অনুষ্ঠানের। সেখানে বাংলার নবান্ন উৎসবের আয়োজন নিয়ে এক অন্তরঙ্গ আলোচনা মেতে উঠেন সকলে।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মঞ্জুর হোসেন। অতিথি ছিলেন-রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমান, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ছামশুল হক।

এর আগে গোদাগাড়ীর চৈতন্যপুরের মাঠে বাংলার কৃষক বেশে ধান কাটার কাস্তে, মাথায় মাথইল, ঘাড়ে লাল গামছা বেঁধে ধান কাটা ও মাড়াই করা হয়। এই সময় সৃষ্টি হয় এক আনন্দঘন মুহূর্ত। শুধু গোদাগাড়ীতে নয়, জেলার অন্য উপজেলাতেও নবান্ন উৎসব শুরু হয়েছে নানা আনুষ্ঠানিকতায়।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, বরেন্দ্রর চার জেলায় (রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ) পুরোদমে আমন কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। সবখানে শুধু ধান কাটার দৃশ্য।

রাজশাহী কৃষি বিভাগ জানায়, জেলায় এবার আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষাবাদ হয় ৭৭ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে। তবে দফায় দফায় বন্যার কারণে জেলায় ৪৭০ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।


Exit mobile version