বর্ষার শুরুতেই পাবনার হাটবাজারে চাঁই বিক্রির ধুম


কলিট তালুকদার, পাবনা:

যমুনা নদী বেষ্টিত পাবনার বেড়া উপজেলা। এ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত বিভিন্ন নদ নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে মাছ ধরায় ব্যস্ততা বেড়েছে এ উপজেলার জেলেসহ নানা বয়সী সৌখিন মাছ শিকারীদের।


নদী ও বিল ঘেরা পাবনার বেড়া উপজেলা মাছের জন্য বেশ বিখ্যাত। এ উপজেলায় রয়েছে ছোট বড় মোট ৮ টি নদী। বর্ষা এলেই উপজেলার বেড়া পুরান বাজার ও চতুর হাটে মাছ ধরার উপকরন চাঁই (দোয়ারি) চাড়ো, পলো, বৃত্তি, বুছনা ইত্যাদি বিক্রির ধুম পড়ে যায়। যে কারনে চাঁই তৈরিতে ব্যাস্ত সময় পার করছে এর সাথে সংশ্লিষ্টরা। চাঁই তৈরির সাথে জড়িয়ে রয়েছে কয়েকশ’ পরিবারের জীবন জিবিকা। চাঁই তৈরির কারিগররা জানায়, বিভিন্ন এনজিও বা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আবার কেউ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বাঁশ কিনে চাঁই তৈরি করে। এক একটি বাঁশ ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দামে কিনেন। এক একটি বাঁশ থেকে তিনটি চাঁই তৈরি করা যায়।

সপ্তাহের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার উপজেলার বেড়া বাজার সংলগ্ন বসে চাঁইয়ের হাঁট। ভ্যান বোঝাই করে চাঁই বিক্রির জন্য বিক্রেতারা নিয়ে আসে এখানে। দূর দুরান্ত থেকে মৎস শিকারীরা চাঁই কিনতে আসে এখানে। এক একটা চাঁই মান বুঝে ৩’শ ৫০ থেকে ৪’শ ৫০ টাকা বিক্রি হয়। বড় আকারের চাঁই বিক্রি হয় আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা।

সরেজমিনে চাঁইয়ের হাটে গিয়ে জানা যায়, বেড়ায় মূলত নাগডেমড়া, ফরিদপুর, আটিয়াপাড়া, ক্ষিদিরপুর থেকে চাঁই (দোয়ারি) বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছে বিক্রেতারা। সেগুলো সিরাজগঞ্জ, বগুড়া সহ দেশের বিভিন্ন জায়গার জেলে ও পাইকারিরা ক্রয় করেন।

হাটে বিক্রি করতে আসা চাঁই বিক্রেতা সাঁথিয়া উপজেলার করমজা গ্রামের আজিজুল মোল্লা জানান, প্রতিটি চাঁই তৈরীতে যা খরচ হয় তা থেকে বিক্রিতে ভালই লাভ হয়। একজন কারিগর সারা দিনে ছোট আকারের দুইটি দোয়ারি চাঁই বানাতে পারে। গেল বছরের চেয়ে এবছর আগেই বেচা কেনা হচ্ছে দামও একটু বেশি পাচ্ছি।

চাঁই কিনতে আসা সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরের তোফাজ্জল মিয়া জানান, চাঁইয়ে চিংড়ি, বোয়াল, বাইন সহ নানান ধরনের দেশী মাছ ধরা পরে। পরিশ্রমও কম। একবার চাঁই পেতে কয়েকঘন্টা পর দেখতে হয় মাছ পরেছে কি না। তাছাড়া বাজারে চাঁইয়ে ধরা মাছের চাহিদাও থাকে বেশি কারণ চাঁইয়ে পড়া মাছ গুলো তাজা থাকে। আষাঢ় মাস থেকেই এগুলো বিক্রি হয় পুরো তিন মাস।

একাধিক বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা পুঁজির আভাবে অনেকে এই শিল্প থেকে মুখ হটিয়ে নিচ্ছে। এজন্য সরকারের সহযোগীতা কামনা করেন তারা।


শর্টলিংকঃ