বাংলাদেশ সুন্দর এক দেশ


ইউএনভি ডেস্ক:

‘হার্নান বার্কোস’—নামটি শুনলেই ফিরে তাকানোর কথা ১১ মার্চ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। স্মৃতি থেকে বের হয়ে আসবে একের পর উদ্‌যাপনের ছবি। এএফসি কাপের ম্যাচে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসের বিপক্ষে এক হালি গোলে বাংলাদেশের ফুটবলে অভিষেক।

বাংলাদেশ সুন্দর এক দেশ

যে গোলের মেলা দেখিয়ে লোভ বাড়িয়ে দিল লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা সতীর্থের খেলা দেখার। কিন্তু এমন সময়েই করোনার কারণে ছেদ পড়ল দেশের ফুটবলে।

করোনাকালে কেমন আছেন আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সাবেক এই ফরোয়ার্ড? কোথায়–ই বা আছেন নতুন আলোয় উদ্ভাসিত দেশের ফুটবলের নতুন তারকা খেতাব আদায় করে নেওয়া মেসির সাবেক সতীর্থ। ব্রাজিলিয়ান স্ত্রীর সঙ্গে বর্তমানে ব্রাজিলের পোর্তো আলেগ্রেতে আছেন। লকডাউন শুরু হওয়ার আগেই মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে ঢাকা ছেড়েছিলেন। তবে বর্তমান সম্পর্কের শেকড় গেঁথে থাকার সুবাদে ফুটবলের দেশ ব্রাজিলে থেকেও মনটা পড়ে থাকে বাংলাদেশে।

৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় পা রেখে ছুটিতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে থেকেছেন মাত্র মাস দেড়েক। এই সময়ে সতীর্থদের সঙ্গে দল বেঁধে হইহুল্লোড় করে অনুশীলন করা। প্রায় ১৬ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে সেই টিম বাস, মাঠ ও সতীর্থদের খুব মিস করছেন বার্কোস, ‘সতীর্থদের সঙ্গে দল বেঁধে অনুশীলনে যাওয়া খুব মিস করছি। একসঙ্গে আরও কত কিছুই করতাম আমরা।’

আর্জেন্টিনার সাবেক স্ট্রাইকার ও মেসির জাতীয় দলের সাবেক সতীর্থ–বাংলাদেশে বার্কোসের পরিচয়ের শুরু এভাবেই। তবে প্রথম ম্যাচের পরেই মেসি-সতীর্থের ছায়া থেকে বের হয়ে নিজের আলোতে উদ্ভাসিত তিনি। এর আগে খুব অল্প সময়ের মধ্যে জয় করতে হয়েছে নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার যুদ্ধ। মাতৃভূমি আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিলের শ্বশুর বাড়ির পরিচিতজনেরা বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে জবাবে কী বলেন? বার্কোসের মুখ থেকেই শুনে নেওয়া যাক, ‘বাংলাদেশ খুবই সুন্দর একটি দেশ। এই দেশের মানুষ খুবই ভালো। বিদেশিদের প্রতি তাঁদের বাড়তি ভালোবাসা আছে।’

বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ৩৫ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন। কিন্তু তাঁর খেলা আবার দেখা যাবে তো বাংলাদেশের মাটিতে! বাস্তবিক অর্থেই উঠে আসছে প্রশ্নটি। এএফসি কাপ ও প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় পর্বের জন্য মোটা অঙ্কের মাসিক বেতনে তাঁকে ঢাকায় এনেছে বসুন্ধরা। করোনার কারণে এএফসি কাপের খেলা স্থগিত আর এই বছর লিগ বাতিল হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন অনেকে। আবার অন্যদিকে বসুন্ধরার সঙ্গে তাঁর চুক্তি শেষ হয়ে যাবে অক্টোবরেই। সবকিছু মিলিয়ে বসুন্ধরার জার্সিতে বার্কোসের খেলার সুযোগ আপাতত আর নেই বললেই চলে।

তাই প্রশ্ন, বাংলাদেশের ফুটবলে আর কী দেখা যাবে বার্কোস-ঝলক? আগামী বছরে নতুন চুক্তিতে খেলার আশার কথাই শোনাচ্ছেন বার্কোস, ‘দেখা যাক কী হয়। ভবিষ্যতের কথা আমরা কেউ বলতে পারি না। তবে আমি খেলার ব্যাপারে আশাবাদী।’ যথাসম্ভব যেকোনো মূল্যে তাঁকে ধরে রাখতে চায় ক্লাব কর্তৃপক্ষও।

এমন ফুটবলারকে কোন দলই বা না পেতে চায়! আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যানভাসে অপরূপ সৌন্দর্য ফুটিয়ে ব্যক্তিগত ৪ গোলের ম্যাচে বসুন্ধরাকে এনে দিয়েছেন ৫–১ গোলের জয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দলীয় কম্বিনেশনে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের গ্রাফ তো আরও ভালো হওয়ার কথা। সেটি হয়তো প্রমাণও করতেন! কিন্তু করোনায় লম্বা বিরতি শেষে সেই পারফরম্যান্সে মরিচা ধরবে না তো! অভয় দিচ্ছেন বার্কোস, ‘কেউ ফুটবল খেলা ভুলে যায় না। খেলা পুনরায় শুরু হলে শতভাগ মনোযোগ দিলেই আশা করি আগের সাফল্য ধরে রাখা সম্ভব।’ একবার ৯০ মিনিটের সুযোগ পেয়ে যা দেখিয়েছেন, বার্কোসের কথার ওপর ভরসা রাখাই যায়।


শর্টলিংকঃ