বাগমারায় অভিযান চললেও থেমে নেই অবৈধ ইটভাটা


শামীম রেজা, বাগমারা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাগমারায় ব্যাঙ্গের ছাতার মতো চোখে পড়ে অবৈধ ইটভাটা। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অনুমোদন। ওই সকল ইট ভাটায় একের পর এক অভিযান চললেও থেমে নেই কোনটাই। প্রশাসনকে বোঁকা বানিয়ে পুনরায় আগেই মতোই ইট তৈরি করে বিক্রয় করছে ভাটা মালিকরা। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন নিয়ম-কানুনই মানা হয়নি ভাটা তৈরিতে। রাস্তার পাশে এবং লোকালয়ে ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে করে একদিকে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। অপরদিকে হুমকীর মুখে পড়েছে জনজীবন।

ইটভাটা
ইটভাটা

ইটভাটা মালিক সমিতির দাবী, পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে ইটভাটা তৈরির জন্য একাধিকবার আবেদন করলেও তারা কোন প্রকার লাইসেন্স প্রদান করছেন না। এর ফলে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠছে ইটভাটা। আর এ সকল ভাটাতেই অভিযান পরিচালনা করছে প্রশাসন। কখনও টাকার বিনিময়ে ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে ইটভাটাকে রক্ষা করা যাচ্ছে। ভেঙ্গেও ফেলছে কখনও। গোপন ভাবে ঝুকি নিয়ে ইটভাটা মালিকরা ভাটা পরিচালনা করে চলেছেন।

জানা গেছে, বাগমারা উপজেলা জুড়ে ৫০টি মতো রয়েছে ইটভাটা। এর মধ্যে স্থায়ী চিমনী ভাটা ৮টি, হাওয়া ভাটা ২৭টি, ড্রাম চিমনী ভাটা ১৫-১৬টি। এ সকল স্থায়ী চিমনী এবং ড্রাম চিমনী ভাটাগুলোতে পুড়ানো হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ। ফলে পরিবেশ হারাচ্ছে তার বৈচিত্র। বৃক্ষ নিধন করে ইট পুড়ানোর কারনে পরিবেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমান। বেড়ে চলেছে তাপমাত্রা। গাছ-পালার ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।

এদিকে রাস্তার ধারে ইটভাটা গুলো তৈরি করায় দিনে দিনে রাস্তার গাছপালা কেটে সাবাড় করছে তারা। সেই সাথে রাস্তা কেটে ওই মাটি দিয়ে ইট তৈরি করছে অনেকেই। রাস্তার পাশের মাটি কাটা এবং ট্রাক উঠানামা করার কারনে উপজেলার শ্রীপুরের স্কাই ভাটার পাশের রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল হয়ে পড়েছে হুমকীর মুখে। ভেঙ্গে যাচ্ছে কোটি টাকার রাস্তা। সম্প্রতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওই ইটভাটায় ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করেন। নানা অভিযোগের কারনে অভিযানে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও আদায় করেন ভ্রাম্যমান আদালত।

এর আগে পরিবেশ অধিদপ্তর উপজেলার ৯টি ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা করে ভেঙ্গে দেয় ভাটাগুলো। এর মধ্য শ্রীপুরের ওই স্কাই ভাটাও ছিল। সঠিক নজরদারির অভাবে দিব্যি চলছে ভাটাগুলো। ইটভাটা মালিকদের দাবী স্থায়ী চিমনী এবং ড্রাম চিমনী ভাটায় কাঠ লাগবেই। ইট পুড়াতে গেলে শুধু কয়লা দিয়ে হয় না।

এ বিষয়ে উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম হেলাল বলেন, ইটভাটার মালিকরা পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেও ভাটা তৈরির কোন লাইসেন্স পাচ্ছেনা। তারপরও মালিকরা অবৈধ ভাবে ইটভাটা নির্মাণ করে চলেছে। প্রশাসনের অভিযান হলে জরিমানার বিনিময়ে রক্ষা পাওয়া যায়। কখনও আবার ভেঙ্গে দিয়ে যায়। তবে পরিবেশ অধিদপ্তর লাইসেন্স প্রদান করলে সুষ্ঠুভাবে এবং নিময়-নীতি মেনেই চলতো ইটভাটা।

এদিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। আগামীতেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। অবৈধ কোন ইটভাটাকে ছাড় দেয়া হবে না। অভিযানে ইটভাটার বেশকিছু সরঞ্জামও জব্দ করা হচ্ছে।

 


শর্টলিংকঃ