বাগমারায় শালিকাকে নিয়ে দুলাভাই উধাও, বগুড়ায় আটক


বাগমারা প্রতিনিধি:

গত ঈদুল ফিতরের দিন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে এসে বিকেলে আপন শালিকাকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি দুলাভাই কোরবান আলী শেখ ওরফে নয়ন শেখ (২৪)। সে পাশ্ববর্তী আত্রাই উপজেলার খলিফাপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নান শেখের পুত্র বলে জানা গেছে।

এই ঘটনায় বাগমারা থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ দীর্ঘ ষোল দিন পর ওই কিশোরীকে গত মঙ্গললবার রাত সাড়ে দশটার দিকে বগুড়া সদর থানাধীন ইসলাম হরিগাড়ি এলাকা উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃত ওই কিশোরীকে বুধবার রাজশাহী মেডিকেলের ওয়ান স্টফ ক্রাইসিস সেন্টার(ওসিসি)তে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পাশ্ববর্তী আত্রাই উপজেলার খলিফাপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নান শেখের ছেলে কোরবান আলী নয়নের সঙ্গে বাগমারা উপজেলা মাড়িয়া ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের জনৈক ব্যক্তির মেয়ের সঙ্গে গত তিন বছর পূর্বে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে কোন সন্তানাদী জন্ম নেয় নাই।

বিয়ের পর হতে জামাই নয়ন শেখ শ্বশুরবাড়ি নিয়মিত যাতাযাত করতে থাকে এবং গোপনে আপন শালিকা একই এলাকার কাঁঠালবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্রির সাথে অনৈতিক সম্পর্ক চালাতে থাকে। বিষয়টি উভয় পরিবারের কোন সদস্য বুঝে ওঠার আগে গত ২৫ মে ঈদুল ফিতরের দিন দুলাভাই নয়ন শেখ তার শালিকাকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও তারা আর ফিরে আসেনা ।

ওই দিন দুলাভাই প্রলোভন দিয়ে তার শালিকাকে শহরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে শালিকা বাঁধা দিলে পরে তাকে একটি সিএনজিকে তুলে জোর পূর্বক অপহরন করে নিয়ে যায় দুলাভাই। পরে তাকে বিভিন্ন স্থানে আটকিয়ে রেখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে বলে মামলায় অভিযোগ করেন নয়ন শেখের স্ত্রী মামলার বাদী জেসমিন আরা।

তিনি জানান, নয়ন শেখ একজন প্রতারক ভন্ড নারী নির্যাতনকারী ও যৌতুক লোভী। বিয়ের পর তাকে মোটা অংকের যৌতুক দেওয়া হলেও সে পুরনায় যৌতুক দাবী করে এবং তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। সর্বপরি সে তার স্কুল পড়ুয়া মেধাবী ছোট বোন কে প্রলোভন দিয়ে এক রকম জোর পূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে তার উপর পাষবিক নির্যাতন চালিয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাগমারা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মনিরুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর ভিকটিমের বড় বোন মামলা দায়ের করলে ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে নয়ন শেখের ছোট ভাই নাঈম শেখকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার কাছে থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নয়ন শেখকে গ্রেফতারে পুলিশ ব্যাপক অভিযান শুরু করে।

ধূর্ত নয়ন বার বার অবস্থান পরিবর্তনের কারণে তাকে শুরুর দিকে গ্রেফতারে কিছুটা বিলম্ব হয়। সর্বশেষ মোবাইল ট্রাকিং এর  মাধ্যমে গত মঙ্গলবার রাতে সাড়ে দশটার দিকে বগুড়া জেলার সদর থানাধীন ইসলাম হরিগাড়ি এলাকার একটি বাড়ি থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার ও নয়ন শেখ কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই গ্রেফতার অভিযানে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অংশ গ্রহন করেন সদর সার্কেলের এএসপি সুমন দেব।

বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃত কোরবান আলী শেখ ওরফে নয়ন শেখকে বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরদিকে উদ্ধারকৃত কিশোরীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বুধবার তাকে রাজশাহী মেডিকেলের ওয়ান স্টফ ক্রাইসিস সেন্টার(ওসিসি)তে প্রেরন করা হয়েছে।


শর্টলিংকঃ