Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

বাঘায় খাল খনন বন্ধ : বৃদ্ধা রহিমার মুখে স্বস্তির হাসি


আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী) :

রাজশাহীর বাঘায় খাল খননের ভেকু উঠিয়ে নেওয়ায় বৃদ্ধা রহিমার বেগমের মুখে এখন স্বস্তির হাসি। ভেকু উঠিয়ে নেওয়ায় জমির কাগজ হাতে নিয়ে গতকাল শুক্রবার মনের আনন্দে তার জমি দেখাচ্ছিলেন।


জানা যায়, রহিমা বেগমের মাত্র ১৮ কাঠা জমি। এই জমিতে যে ধান ফলত , সেই ধান দিয়ে সংসার চালাতেন তিনি। এই জমিটুকুর উপর দিয়ে  খাল খনন কাজ শুরু করে রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে জানতে পেরে জমির মালিকরা রাজশাহীর আদালতে পৃথকভাবে ৪টি মামলা দায়ের করেন। তারপরও কাউকে তোয়াক্কা না করে চলতে থাকে খাল খননের কাজ।

খাল খনন শুরুর পর থেকে রহিমা বেগম শেষ সম্বলটুকু বাঁচাতে বিভিন্ন নেতা কর্মীর কাছে দোঁড়াতে থাকেন। এক পর্যায়ে কোন কাজ না হওয়ায় কাগজ বুকে নিয়ে জমিতে অবস্থান করতে থাকেন । এ জমির পাশে  ৬টি মেহগনি গাছ ছিল, সেগুলো খাল খননকারীরা কেটে ফেলে। তার এ জমিতে আরো ৬টি আম গাছ আছে। খননকারীরা সেগুলো কেটে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

৪৮ বছর আগে রহিমা বেগমের স্বামী নুর মোহাম্মদ মারা গেছেন।  ৫ কন্যার জননী রহিমা বেগমের বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাজুবাঘা ইউনিয়নের বেলগাছি গ্রামে। রহিমা বেগমের মাত্র ২ শতাংশ জমির ওপর একটি টিনের ছাপরা ঘর রয়েছে।

বৃদ্ধা রহিমা বেগম বলেন, দুনিয়াতে আমার কেউ নেই। আল্লাহ আমার জমি রক্ষা করেছে। খাল খননকারীরা ভেকু তুলে নিয়ে গেছে। আমি আবার জমিতে ধানের আবাদ করতে পারবো। বছরের খাদ্য ঘরে আসবে।

উল্লেখ্য, মোশিদপুর থেকে নওটিকা আরিফপুর পর্যন্ত ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৮ দশমিক ২ কিলোমিটার খাল খনন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। ধানী জমির ওপর দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ না করে শুধু প্রকল্পের অনুমোদন নিয়ে ২৪ মে খাল খনন কাজ শুরু করে রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফুল হক বলেন, বাঘার মানুষের উন্নয়নের জন্য মন্ত্রীর সুপারিশে প্রকল্প অনুমোদন হয়। সেই মোতাবেক কাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু জমি মালিকদের সমস্যার কারনে বর্তমানে ভেকু উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।  পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, শুনেছি খাল খননের ভেুক উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। জমি মালিকদের সাথে সমাধান করে পূনরায় খনন করা হবে।


Exit mobile version