বাঘায় পদ্মায় বাড়ছে পানি ভাঙছে পাড়


আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী):
রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙছে পদ্মার পাড়। ধসে পড়ছে মাটি। ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কিশোরপুর ও গোকুলপুর এলাকায়। এরই মধ্যে গ্রাম দুটির আড়াই কিলোমিটার ভাঙনের কবলে পড়েছে। এতে জমি ও গাছপালা নদীতে চলে গেছে। পদ্মার পাড় থেকে ৪০-৫০ গজ দূরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। উদ্যোগের অভাবে অরক্ষিত রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মূল বাঁধও।


সরেজমিনে গতকাল শুক্রবার সকালে ভাঙন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কিশোরপুর গ্রামের তারু হোসেনের বাড়ির পশ্চিমের বাঁধে পানি উন্নয়ন বোডের ব্লক বসানো আছে। আর ভাঙন শুরু হয়েছে তার বাড়ির পূর্বে থেকে গোকুলপুর খেয়াঘাট এলাকার তোজাম্মেল মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত। ভাঙন ঠেকাতে বছর বছর বাঁশের বেড়া দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে প্রকল্পের আওতায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ করা হয়েছে। তারপরও নদীভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না এ এলাকা। স্থানীয় আফজাল হোসেন জানান, গত ১২ বছরে পদ্মার ভাঙনে এসব এলাকার সহ্রাধিক বাড়িসহ পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, বিজিবি ক্যাম্প ও কয়েক হাজার বিঘা আবাদি-অনাবাদি জমি চলে গেছে নদীতে। ভাঙনে গৃহহারা হয়েছে হাজারো পরিবার।

২০০০ সালে মীরগঞ্জ, আলাইপুর হয়ে গোকুলপুর, কিশোরপুর পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। তারপর থেকেই প্রতি বছর ভাঙতে থাকে পদ্মা। ২০০৪ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন কবলিত জায়গাগুলোতে বালুর বস্তা দিয়ে তা ঠেকানোর পর ২০০৫ সালে উদয়নগর বিজিবি ক্যাম্পসহ চৌমাদিয় গ্রামটি রক্ষার জন্য ব্লক বসানো হয়। সেই ব্লক বসানোর কয়েকদিন পর সেগুলো নদীতে ভেসে যায়।

পাকুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফকরুল হাসান বাবলু বলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু তার বাস্তবায়ন হয়নি।  বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা জানান, জেলা প্রশাসককে জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক জানান, নদীর তীরবর্তী চার হাজার ৩০০ মিটার ব্লক বসানোর কাজের জন্য প্রস্তাবিত একটি মেগা প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের জন্য পাঠানো আছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।


শর্টলিংকঃ