Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

বাঘায় বন্যায় অসুস্থদের ডুঙ্গা নিয়ে বাড়ি বাড়ি চিকিৎসা দিচ্ছেন মতলেব


আমানুল হক আমান, বাঘা:

রাজশাহীর বাঘায় বন্যায় পদ্মার মধ্যে ডুবে যাওয়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন পল্লী চিকিৎসক মতলেব হোসেন। বৃহস্পতিবার টিনের তৈরী করা ডুঙ্গা নিয়ে তিনি অসুস্থ ব্যক্তিদের এ চিকিৎসা দিতে দেখা গেছে।

জানা যায়, বাঘা উপজেলার পদ্মার মধ্যে পরিবার রয়েছে ৩ হাজার ৭৬২টি। গরু-ছাগল রয়েছে সাড়ে ৭ হাজার। জনসংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। এরমধ্যে অধিকাংশ বাড়িতে পানি উঠেছে। এরমধ্যে কেউ কেউ উঁচু মাচা করে নিজ বাড়িতে বসবাস করছে। আবার অনেকে অন্যত্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

তবে বাড়িতে অসুস্থ থাকা মানুষকে পল্লী চিকিৎসক ডুঙ্গায় গিয়ে এ চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। মতলেব হোসেন চৌমাদিয়া বাজারে একটি চেম্বার রয়েছে। এ বাজারটিও বন্যায় তলিয়ে গেছে। তবে তার চেম্বারটা কিছুটা উঁচু হওয়ায় ভেতরে পানি গেলেও চোকির উপর বসে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

তার চেম্বারে না আসতে পারলে তাকে মোবাইল ফোনে জানালে সাথে সাথে তার ডুঙ্গা নিয়ে ওই অসুস্থ ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। তবে মতলেব ওষধের দাম ছাড়া অতিরিক্ত ভিজিট নেয় না বলে জানান। তার সাথে একটি ব্যাগ থাকে এ ব্যাগের মধ্যে প্রাথমিক প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়ার যাবতীয় সরাঞ্জম রয়েছে। এ বন্যায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১১টি আশ্রয় কেন্দ্রও স্থান করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১১ স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এবারের বন্যা সেই ১৯৮৬ সালের বন্যার চেয়েও ভয়াভহ অবস্থা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর চৌমাদিয়া ওয়াড্ঈঙচণ; আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মতলেব আলী জানান, পল্লী চিকিৎসক দীঘ্ঈঙচণ;দিন থেকে চৌমাদিয়া বাজারে মানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। তিনি রোগী দেখে অতিরিক্ত মূল্য নেয় না। তিনি শুধু ওষধের দাম নেয়। এ বন্যার মধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিসিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

চৌমাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা বলেন, আমার স্কুলের পাশে চৌমাদিয়া বাজার। এ বাজারে একটি চেম্বার দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন তিনি।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়াড্ঈঙচণ; সদস্য আবদুর রহমান বলেন, এ বন্যার মধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন পল্লী চিকিৎসক মতলেব হোসেন।

আতারপাড়া চরের ৭৫ বছর বয়সের আকছেদ ব্যাপারি নামের এক বৃদ্ধ জানান, মতলেব ডাক্তারের রাত দিন নেই। মানুষ তখন ডাকে সাথে সাথে তার বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করে। তার প্রতি কারো কোনো অভিযোগ নেই। আমরা তার পরামর্শে ওষধ খায়। এ বন্যার মধ্যেও ডুঙ্গা নিয়ে এ বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে গিয়ে নিয়মিত চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে পল্লী চিকিৎসক মতলেব হোসেন বলেন, আমি শুধু টাকার জন্য চিকিৎসা দিই না। আমার দ্বারা মানুষ উপকার পায়। আমাকে যখন অসুস্থ মানুষ ডাকে সাথে সাথে তার বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করি। তবে আমার ৬ সদস্যের পরিবার। আমি এ কাজ করে সংসার পরিচালনা করি। তবে কারো কাছে কোন দিন অতিরিক্ত টাকা নিয় না।

চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, মতলেবকে আমি চিনি সে দীঘ্ঈঙচণ;দিন থেকে এলাকার মানুষকে চিকিৎসা দেন। বন্যা হয়েছে। চরের মানুষ অসুস্থ হলে প্রাথমিক পর্যায়ে তার কাছে চিকিৎসা নেয়। জটিল হলে অন্যত্রে যায়। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা সে ভালো করে।


Exit mobile version